ময়মনসিংহ ব্যুরো:
শহরে ভোট এলেই আলোচনায় তিনি। শীতল সরকারের নামও জানা অনেকের। কারণ, ১৯৮১ সাল থেকে ছয়বার পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন তিনি। কিন্তু জয়ের সোনালী সূর্য উঁকি দেয়নি তার আকাশে। ৩৮ বছরে হয়তো অনেকেই হাল ছেড়ে দিতেন। কিন্তু তা করেননি শীতল সরকার। সপ্তমবারে এসে ঠিকই সৃষ্টিকর্তা তাকিয়েছেন তার দিকে। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়ে হয়েছেন কাউন্সিলর।
এক সময় সংসার ছিল তার। কিন্তু তা হারিয়েছেন নির্বাচন করতে গিয়েই। অভিমান করে সন্তান নিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী। তাতে চাপা দুঃখ থাকলেও, এখন এলাকার জনগণকে নিয়েই বানিয়েছেন বড় পরিবার।
শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। কিন্তু জনগণ মিষ্টি কুমড়া প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়ের মুকুট পড়িয়েছেন শীতল সরকারকেই। প্রতিদানে ভোটারদের কী দেবেন তিনি?
শীতল সরকার বলেন জনগণের চরিত্র গঠনে কাজ করবেন তিনি। বলেন আমি না থাকলেও রাস্তা হবে, ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বলবে, ড্রেন পরিষ্কার হবে। এটা স্বাভাবিক কাজ। তবে আমি মানুষের মাঝে ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করতে চাই।
ছোট বড়কে সম্মান করবে, বড় ছোটকে স্নেহ করবে। একে অপরকে ভালোবাসবে সেই পরিবেশ তৈরি করতে চাই আমি। তাহলে উন্নয়ন এমনিতেই হবে।
কেন এই নির্বাচন প্রীতি জানতে চাইলে শীতল সরকার বলেন বয়স যখন ২৭ তখন দেখি এলাকার একজন খারাপ লোক মদখোর কমিশনার নির্বাচন করছে। আমি ভাবলাম একটা খারাপ লোক যদি নির্বাচন করতে পারে তাহলে আমি একজন ভালো মানুষ হয়ে কেন পারবোনা, সেই থেকে যাত্রা শুরু।
শহরের কালীবাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরে থাকেন। সংসারও চলে টেনেটুনে। পেশায় ছোট ব্যবসায়ী, তবে মনেপ্রাণে তিনি সমাজকর্মী।
তার নির্বাচনের একজন তরুণ কর্মী রায়হান বলেন আমার জন্মের আগে আমার বাবা শীতল সরকারের নির্বাচন করেছেন। এখন আমি তার কর্মী হয়ে কাজ করেছি। তার জয়ে আমরা আনন্দিত। স্থানীয় আলী ইউসুফ বলেন শীতল সরকার কোন পরাজয়কে পরাজয় হিসেবে মনে করেননি। চেষ্টা করে গেছেন সফলতা পেয়েছেন। যারা অর্থ খরচ করে ভোট কিনেন তাদের এখান থেকে শিক্ষা নেয়া উচিৎ।
এলাকাবাসী বলছেন সবুরে মেওয়া ফলে এর অন্যতম উদাহরণ শীতল সরকার। তিনি যমুনা নিউজকে জানান মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চান কর্ম এবং ব্যাবহার দিয়ে।
Leave a reply