দীর্ঘ এক বছর পর নবগঠিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শোভন রাব্বানীর পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিতর্কিত ও বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগে বহিষ্কৃতদের পদায়ন করার প্রতিবাদে আজ বিকেলে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও ভুক্তোভোগীরা।
ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও ক্ষুদ্ধ এসব নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে গেলে নতুন কমিটিতে পদ পাওয়া ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিক খান ও অর্থ সম্পাদক মো. রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে সাত আটজন অনুসারী সহ এই মিছিলের উপর হামলার অভিযোগও উঠে।
হামলায় আহত হন ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সদস্য ও ডাকসুর বর্তমান সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, কবি সুফিয়া কামাল হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা শিকদার, ডাকসুর আরেক সদস্য ফরিদা পারভীন, ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার সহ কয়েকজন।
হামলার বিষয়ে তানভীর হাসান সৈকত যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, আমরা মধুর ক্যান্টিনের সামনে আসার পর সাদিক খান ও রাকিব হোসেন ও তাদের সাত আটজন অনুসারী মিলে আমাদের কলার ধরে মারধর করে। এসময় তারা লিপি, তিলোত্তমা ও ফরিদা পারভীনের গায়েও হাত তোলে।
হামলার বিষয়ে তিলোত্তমা শিকদার বলেন, আমি গত কমিটিতেও উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলাম এবারও আমাকে উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেয়া হয়েছে, আমার মতো একজন ত্যাগী কর্মীকে একই পদে পদায়ন করার মানে কি? যেখানে এমন অনেক সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক আছেন যাদের এবারই প্রথম পদ। এরপর আমরা যখন মধুর ক্যান্টিনে সবাই মিলে মুভ করা শুরু করলাম তখন সাদিক খান আমার উপর ও লিপির উপর হামলা করে, এক পর্যায়ে তারা আমাদের ধাক্কা দেয় এবং লিপির উপর হামলা করে আমি বাধা দিতে গেলে আমার উপরও হামলা করে। আমরা এমন ছাত্রলীগতো চাইনি।
সাদিক খানের ব্যাপারে বলতে যেয়ে তিলোত্তমা বলেন, সাদিক খান যিনি বিবাহিত, যার স্ত্রী কিছুদিন আগে মারা গেলো; এমন বিতর্কিত ব্যক্তি কিভাবে এ কমিটিতে স্থান পায়।
হামলার পরপরই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি সামনে আনেন তানভীর হাসান সৈকত। তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো।
‘নবগঠিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিতর্কিত, জামাত, বিএনপি ও রাজাকারের সন্তান, বিবাহিত (সন্তানের জনক), চাকুরীজীবী, বয়োসোর্ধ, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, বিভিন্ন মামলার আসামি, যারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় ছাত্রদল, শিবির করার দায়ে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল এমন অনেকে কমিটিতে স্থান দেওয়া এবং গত কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা সম্পাদক, উপ-সম্পাদক, সহ-সম্পাদক, সদস্য, বিভিন্ন হলের সভাপতি/সাধারন সম্পাদক ছিল ও যারা ডাকসুর বর্তমান নির্বাচিত সম্পাদক, সদস্য তাদের ভালো পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, দুঃসময় রাজপথে সক্রিয় এবং গত কমিটিতে ভালো পদ থাকার পরেও তাদের পদ বঞ্চিত করার প্রতিবাদে যখন আমার ছাত্রলীগের ভাইয়েরা, বোনেরা হাকিম চত্তর থেকে মিছিল বের করে অপরাজেয় বাংলা, শ্যাডো হয়ে মধুর ক্যান্টিনে যায় তখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি অনুসারীরা প্লান করে আমাদের বোন বিএম লিপি আক্তার এবং #তিলোক্তমা শিকদারের ও ফরিদা পারবিনের উপর হামলা করে।
আমরা ধিক্কার জানাই বোনদের উপর এই ন্যাক্কারজনক হামলার। ঘৃণাভরে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি এবং অচিরে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের কমিটিতে স্থান দিতে হবে।’
Leave a reply