নারী সহকর্মীদের কীভাবে ধর্ষণ করা হবে, কাকে আগে, কাকে পরে- তারই এক বিস্তারিত তালিকা তৈরি করেছিল মার্কিন নৌসেনারা।
সেই সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে এভাবেই যৌন হয়রানি করে আসছিল। সম্প্রতি জর্জিয়ায় মোতায়েন ইউএসএস ফ্লোরিডা নামের এক সাবমেরিন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই তালিকা।
এটাকে ‘ধর্ষণ তালিকা’ হিসেবে অভিহিত করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ। এরপরই মার্কিন নৌবাহিনীর নারী অবমাননার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় এখনও তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়নি। এ তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে সাবমেরিনের নারী কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। খবর ইউএস নেভি টাইমস ও এনডিটিভির।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে প্রথমেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী (নেভি সিল)। উন্নত প্রযুক্তি, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে নৌবাহিনীতে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী সব নাবিক ট্রেনিং নেন।
রোববার সেই বিশ্বের সেরা ‘স্পেশাল ফোর্স’ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় এ চাঞ্চল্যকর তথ্য। কয়েক মাস আগেই এ তালিকা কর্তৃপক্ষের হাতে এলেও ফ্রিডম অব ইনফরমেশন আইনের জোরে সম্প্রতি এটি প্রকাশ করা হয়েছে।
৭৪ পাতার এ তালিকায় সব নারী সহকর্মীর নাম দিয়ে পাশে তাদের সম্পর্কে নানা ‘বাজে যৌন মন্তব্য’ করা হয়েছে। তবে এখনও এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়নি।
২০১১ সাল থেকেই সাবমেরিনে দায়িত্ব পালন করে আসছিল নারী সেনারা। কিন্তু ২০১৫ সালেই প্রথমবারের ‘সাইলেন্ট সার্ভিস’র নামে রহস্যজনক কাজে তাদের ডাকা হয়।
এরপর ২০১৬ সালে প্রথম দুই নারী সেনাকে গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন ইউএসএস ফ্লোরিডায় নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ পান আরও কয়েকজন নারী নাবিক।
মার্কিন নৌসেনায় নারী কর্মী নিয়োগ করা এটি দ্বিতীয় সাবমেরিন। কিন্তু প্রথম থেকেই সাবমেরিনের ভেতরে ভয়াবহ যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আসছে নারী কর্মীরা। এর মধ্যে গোসলের সময় নারী সহকর্মীদের ছবি ক্যামেরায় ধারণ, বিভিন্ন সময় অনাকাক্সিক্ষত স্পর্শ ইত্যাদি। অভিযোগ জানিয়েও যথাযথ তদন্ত কিংবা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি।
সম্প্রতি এক অফিসারের বিরুদ্ধে এক নারীকর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। সাবমেরিনের কর্মকাণ্ড তদারকি সম্পর্কিত কিছু অভিযোগসহ নারী কর্মীদের যৌন হয়রানির ঘটনা যথাযথ তদন্ত করতে ব্যর্থতার কারণে ক্যাপ্টেন কার্চারকে বরখাস্ত করা হয়।
ওই ঘটনার মাত্র ১১ মাস পর নতুন করে সেনা কর্মকর্তাদের ভয়াবহ যৌন কেলেঙ্কারি প্রকাশ পেল। নেভি টাইমস জানিয়েছে, সাবমেরিনের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে তালিকাটি পাওয়া গেছে।
৩২ জন নারী কর্মীর নামের পাশে তারকা চিহ্ন দিয়ে তাদেরকে ধর্ষণের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এ তালিকা হালনাগাদ করত সেনারা।
Leave a reply