পটুয়াখালী প্রতিনিধি
মন্ত্রী আসবেন, তাকে শুভেচ্ছা জানাতে হবে। আর এই শুভেচ্ছা জানানোর দায়িত্ব পড়লো স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে হাজির মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে। প্রবল বর্ষণের মধ্যেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা শতাধিক শিক্ষার্থীকে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হাজিরহাট লঞ্চঘাট সংলগ্ন স্থানে আজ বেলা ১১টার দিকে। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক (এমপি)-কে শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনা চলছে।
জানা গেছে, শনিবার সরকারী সফরে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তখন উপজেলার হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রায় আধাঘন্টা রাস্তায় দাড়িয়ে থেকে বৃষ্টিতে ভিজে তাকে শুভেচ্ছা জানায়।
মন্ত্রীর একান্ত সচিব নুর আলম স্বাক্ষরিত সফরসুচীর মাধ্যমে জানা গেছে, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক গতকাল ১৪ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের উপজেলাগুলোর নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার কথা প্রথমে স্বীকার করে বলেন, ভাংগন স্কুলের খুব কাছে চলে আসছে তাই মন্ত্রীকে আবেদন জানাতেই শিক্ষার্থীদের দ্বারা শুভেচ্ছা জানান।
পরক্ষণেই আবার বলেন, মন্ত্রী মহোদয় আসবেন শুনে উৎসুক শিক্ষার্থীরা নিজেরাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়নি। তাছাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারও আমাদেরকে ওখানে যেতে বলেছেন।
দশমিনা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সেলিম মিয়া বিষয়টি ঠিক হয়নি বলে স্বীকার করে জানান, বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা কোন মন্ত্রী সংসদ সদস্যদেরকে শুভেচ্ছা জানাবে এমন কোন বিধান নেই, এরকম কোন নির্দেশনাও কাউকে দেয়া হয়নি। যদি এমনটা ঘটে থাকে তবে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতিউৎসাহী হয়ে এ কাজ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ জানান, মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পেয়েছেন। আগে থেকে কিছুই জানতেন না। মন্ত্রী মহোদয় তার কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। তবে ওই স্কুলটি এমপিও ভুক্ত না হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক মন্ত্রীর সহানুভুতি পেতে এটা করতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
Leave a reply