নেতৃত্ব নির্ধারণে বয়সসীমা বাতিল দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের পূর্বনির্ধারিত অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।রোববার বেলা ১১ টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারা অবস্থান নেয়।এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের স্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, সার্চ কমিটিসহ দলের জেষ্ঠ নেতারা তাদের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন।যে কারণে আমরা বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূটি স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু আজ শনিবার পর্যন্ত আমাদের দাবির বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।তাই আমরা আজ সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি।
এর আগে ছাত্রদলের নেতাদের দাবির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে এবং সংকটের সমাধান করতে সার্চ কমিটি করে বিএনপি। এ কমিটির আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতারা।তবে পরে সেই কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানান ছাত্রদল নেতারা।
এ বিষযে ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বুধবার জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি যৌক্তিক। এ ছাড়া আমাদের দাবি ছিল- ছয় মাসের মধ্যে একটি কমিটি, আগামী জানুয়ারিতে এক বছরের জন্য একটি কমিটি গঠনের। তার পর থেকে ছাত্রদের দিয়ে নিয়মিত কমিটি করা হোক, যা আমরা গত মঙ্গলবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকে সার্চ কমিটিকে জানিয়েছি। তাদের আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও নতুন কমিটির সদস্য হওয়ার বয়সসীমা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার দিনভর বিক্ষোভ ও অনশন করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানে ক্ষুব্ধ নেতাদের ডেকে পাঠানো হয়।
সেখানে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে গঠিত সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। সূত্র জানায়, ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বিগত আন্দোলনে তাদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
তারা বলেন, নতুন কমিটি গঠনে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রার্থী করার বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। সে হিসাবেও তো বয়স ৩৩-৩৫ বছরই থাকল। তা হলেও তো ছাত্র দিয়ে কমিটি গঠন হচ্ছে না।
ছাত্রদল নেতারা বলেন, ৬ মাসের আহ্বায়ক কমিটি করে অন্তত সিনিয়রদের সম্মানজনকভাবে বিদায় দেয়া যেত। পর্যায়ক্রমে ছাত্রদের হাতে ছাত্রদল ফেরানোর উদ্যোগ নিলেই হতো। ছাত্রদল করতে গিয়ে যারা গুম হয়েছে, জেল খেটেছে, চাকরির বয়স হারিয়েছে, তাদের তো মনের সান্ত্বনার বিষয় আছে। আজকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ছাত্রদলের গত দুই কমিটির ১০-১৫ জন ছাড়া কাউকে কোনো অঙ্গসংগঠনে পদ দেয়া হয়নি- এটিই বাস্তবতা।
আন্দোলনরত নেতারা বলছেন, দাবি পূরণে দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুনরায় আন্দোলনও শুরু করবেন তারা। শনিবার রাতে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা।
Leave a reply