ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে তিতাস নদীর উপর থাকা জরাজীর্ণ সেতুর রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ায় সেতুটি দিয়ে সীমিত আকারে হালকা যানবাহন চলাচল করছে। ভারী ও মাঝারী আকারের যানবাহনগুলো চলাচল করছে বিকল্প পথ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-সরাইল ও হবিগঞ্জে লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চান্দুরা-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে।
ওই দুটো সড়কে তীব্র যানজট হওয়ায় বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রীরা সীমাহীন দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন। সেতুটি মেরামত কাজও হচ্ছে ধীরগতিতে। এতে ক্ষুব্দ এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। পাশপাশি আটকে আছে শত শত পণ্যবাহী গাড়ী। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছতে পারছে না এই সকল পণ্যবাহী গাড়ী।
শুক্রবার সকালে সেতু এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সেতুর মেরামত কাজ করা হচ্ছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। যেতে দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র হালকা যানবাহনকে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বৃহত্তর সিলেটগামী যানবাহনগুলোকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-সরাইল ও হবিগঞ্জের লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক দিয়ে এবং সিলেট থেকে আসা ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী যানবাহনগুলোকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে সরু ও আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-সরাইল ও হবিগঞ্জে লাখাই-হবিগঞ্জ সড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড থেকে নাসিরনগরের ধরন্তিঘাট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চান্দুরা-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়কের বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা থেকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। উভয় সড়কেই অত্যন্ত ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে তিতাস নদীর উপর থাকা পুরানো ও জরাজীর্ণ সেতুটির পূর্ব দিকের রেলিং ভেঙ্গে সেতুর একাংশসহ নদীতে পড়ে যায়। এরপর থেকে সেতুটির উপর দিয়ে ভারী এবং মাঝারি আকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
সরজমিনে গিয়ে আরও দেখা যায়, সরু ও আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে ভারী ও মাঝারী আকারের যানবাহন চলাচল করায় মহাসড়ক জুড়ে তীব্র যানজট। এতে করে বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা-আখাউড়া সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে ভরা। এই রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে।
অপরদিকে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি সরু হওয়ায় সদর উপজেলার বিশ্বরোড থেকে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক পর্যন্ত রাস্তাটি সরু হওয়ায় অত্যন্ত ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করছে।
সিলেট থেকে ঢাকাগামী যাত্রী মো. আলীম মিয়া বলেন, তার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক কাজে তিনি সিলেট গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে কয়েক ঘন্টা বাসে বসে থেকে পরে তিনি ১০ কিলোমিটার হেটে শাহবাজপুর থেকে বিশ্বরোড এসেছেন।
একই ধরনের কথা জানালেন বাসযাত্রীরা। তারা আরও জানায় দুই ঘন্টা ধরে বিশ্বরোডে বাসে বসে আছে। কখন যে সিলেটে পৌছতে পারবে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন বলে আক্ষেপ করেন।
আটকে আছে পণ্যবাহী গাড়ী:
প্রতিদিন বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে রাজধানী ঢাকা ও চট্রগ্রাম থেকে মালামাল পৌছে দেওয়ার জন্য আটকে আছে শত শত পণ্যবাহী গাড়ী। বিশেষ করে হবিগঞ্জ জেলার অর্থনৈতিক জোন হওয়ায়, এখানে গড়ে উঠা শিল্প কলকারখানা গুলো পড়েছে চরম বিপাকে। যথা সময়ে আসতে পারছেনা তাদের মালামাল। ফলে বন্ধ হয়ে আছে অনেক শিল্প কালকারখানা নিয়মিত কার্যক্রম। এছাড়া কাচাঁ পণ্যও যথাসময়ে না পৌছার কারণে রাস্তাই নষ্ট হচ্ছে।
এই ব্যাপারে খাটিহাতা হাইওয়ে পুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হোসেন সরকার জানান, সেতুটি বিকল হওয়ায় অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। তিনি বলেন, দুটো আঞ্চলিক মহাসড়কেই তীব্র যানজট। তবে তা আগের চেয়ে একটু কম।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন কে জানান সেতুটি মেরামত কাজ চলছে। আশা করি আগামী ১০ দিনের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ হবে।
Leave a reply