টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্র সজিব মিয়াকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন ওরফে হৃদয় ও নিহত সজিবের বন্ধু মো. সজিব। নিহত সজিব মিয়ার দূরসম্পর্কের চাচা মো. মনিরুজ্জামানের প্ররোচণায় তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ ও মো. সজিব শুক্রবার টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমন কর্মকার তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করার পর তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো নির্দেশ দেন। তাদের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহত সজিবের ওই চাচা মো. মনিরুজ্জামানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনিরুজ্জামান টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ি গ্রামের সেকান্দার আলীর ছেলে।
এদিকে নিহত সজিব মিয়ার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনের শ্বশুরবাড়ি রংপুরের গঙ্গাচরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামি পুলিশের স্পেশাল আর্মড ফোর্সেস (এসএএফ) কনস্টেবল মোশারফ হোসেন হৃদয় বঙ্গবন্ধু সেতু কেপিআই ক্যাম্পে কর্মরত। তিনি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার চেতরা গ্রামের মো. আছির উদ্দিনের ছেলে।
অপর আসামি মো. সজিব ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া গ্রামের মোকাদ্দেস আলীর ছেলে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় বিপিএম শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, কালিহাতী উপজেলার হাতিয়া উত্তরপাড়া রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে গত ১৬ জুন বিকালে ১৭-১৮ বছরের এক ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ি গ্রামের সামাদ মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম লাশটি তার ছেলের বলে শনাক্ত করেন। পরদিন জাহানারা বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘটনার সঙ্গে কনস্টেবল মোশারফ ও মো. সজিবের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। তাদের দু’জনকে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দু’জনেই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন তারা।
পুলিশ সূত্র জানায়, তারা উভয়েই জবানবন্দিতে জানিয়েছেন- নিহত সজিব মিয়া গত ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় বেড়াতে যায়। তখন সজিবের ওই দূরসম্পর্কের চাচা মনিরুজ্জামানের প্ররোচণায় ওইদিন রাতে সজিবকে তারা দুজন কোমল পানীয়ের সঙ্গে কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। সজিব ঘুমিয়ে পড়লে তার মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রাখে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামান সজিবদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। তাকে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a reply