সময়ের পরিক্রমায় রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন হলেও বিশ্বের নানা প্রান্তে এখনও রাজতন্ত্র রয়েছে। হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে ব্রিটেন অন্যতম। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা কম হলেও এখনও শাসনদণ্ড হাতে বহাল তবিয়তে ব্রিটিশ রাজপরিবার। তবে প্রভাব-প্রতিপত্তি কমে গেলেও এ রাজপরিবারের বিলাস-ব্যসনের মাত্রা কমেনি এতটুকু। রাজ্যপালনে ব্যয় না করলেও এখন ব্যয় হয় অঢেল অর্থ।
এক হিসাবে দেখা গেছে, শুধু খাদ্য ও পানীয়ের জন্যই খরচ হয় ১৭ লাখ পাউন্ড (১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা)। এর মধ্যে শুধু মদের খরচই ৪ লাখ পাউন্ড (৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা)। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পোশাক লন্ড্রি ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয় ৬ লাখ পাউন্ড। রাজপ্রাসাদের বরাত দিয়ে সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, এসব অর্থের সিংহভাগই খরচ হয়েছে রাজ-অতিথি আপ্যায়নে। ২০১৮-২০১৯ সালে নানা উপলক্ষে ২৪০টি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাজপ্রাসাদের হাউসহোল্ড ডিপার্টমেন্ট। এসব অনুষ্ঠানে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়েছে। এজন্য রানীকে প্রতিবছর সোভরেন ফান্ড হিসেবে ৮ কোটি ২২ লাখ পাউন্ড সরবরাহ করা হয়, যা সরাসরি ব্রিটিশ জনগণের কর থেকে আসে।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পদ রয়েছে ৮৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কিন্তু সেটা তো রাজপরিবারের সম্পদ। ফোর্বস সাময়িকী অনুসারে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মোট সম্পদের মূল্য হতে পারে ২৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বিভিন্ন খাত থেকে তিনি বছরে পান ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। রানীর তিনটি প্রধান আয়ের উৎস রয়েছে। একটি হচ্ছে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে বাৎসরিক হারে পাওয়া সভরেইন গ্রান্ট, ডাচি অব ল্যাঙ্কাসটার এস্টেট এবং তার ব্যক্তিগত বিভিন্ন সম্পত্তি ও বিনিয়োগ। প্রতিবছর নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রানী। কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রধানদের নিয়ে বৈঠকসহ অন্যান্য দেশের রাজা-বাদশাহদের সফর উপলক্ষেও অনুষ্ঠান করা হয়। যেমন গত বছরের অক্টোবরে নেদারল্যান্ডসের রাজার সফর উপলক্ষে বাকিংহাম প্যালেসের বলরুমে বিশাল আয়োজন হয়। এছাড়া এ বছরের গত মাসেই ব্রিটেন সফর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সম্মানেও আয়োজন হয়। মূলত এসব অনুষ্ঠানেই খাদ্য ও পানীয় পরিবেশনে বড় ব্যয় করতে হয়। গত বছর তথ্য ও যোগাযোগ খাতে রাজপরিবারের খরচ হয়েছে ৩৮ লাখ পাউন্ড।
Leave a reply