গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
অবশেষে বয়স্ক ভাতার কার্ড পেয়েছেন গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ৯২ বছর বয়সী হতদরিদ্র বৃদ্ধা আতপজান বেওয়া।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে সাদুল্যাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায় নিজ উদ্যোগে তার কার্যালয়ে আতপজানের হাতে কার্ড তুলে দিয়েছেন। এসময় অফিসের কারিগরি প্রশিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান ও ইউনিয়ন সমাজকর্মী নাজমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বৃদ্ধা আতপজান বেওয়ার বাড়ি সাদুল্যাপুর উপজেলার ৫নং ফরিদপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চাঁদ করীম গ্রামে। তিনি গ্রামের মৃত মছির উদ্দিন সরকারের প্রথম স্ত্রী।
আতপজান বেওয়ার বয়স বর্তমানে ৯২ বছর। ১৫ বছর আগে স্বামী মছির উদ্দিন সরকার মারা যান। আতপজনের কোন ছেলে-মেয়ে নাই। অভাবের সংসারে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে চরম অভাব-অনটনে দিন কাটছিল আতপজানের। দু’বেলা খাবার না জুটলেও কেউ তার খোঁজ রাখেনি। মাথা গোজার ঠাঁই হিসেবে স্বামীর বাড়িতে একটি জরাজীর্ণ ঘরেই কোন রকমে বসবাস করেন তিনি। আতপজানের এমন দুরাবস্থা এতোদিন স্থানীয় কোনো ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধির নজরেও আসেনি। তার নামে মেলেনি বিধবা বা বয়স্ক ভাতার একটি কার্ড।
সাদুল্যাপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মানিক চন্দ্র রায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আতপজান বেওয়ার কোন আপনজন নাই, তাছাড়া তার কোন সহায়সম্বলও নেই। দরিদ্র আতপজানের অসহায়ত্বের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তাকে ভাতার কার্ড করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আতপজানকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসা হয়। কাগজপত্র যাচাই ও দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করে আতপজানের হাতে কার্ড তুলে দেয়া হয়। রাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আতপজনকে নিজ উদ্যোগ ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। আতপজান বেওয়া এপ্রিল মাস হতে ভাতার অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি’।
জীবনের শেষ বয়সে এসে ভাতার কার্ড পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন আতপজান বেওয়া। তিনি বলেন, ‘কার্ডের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কিন্তু ভাতার তালিকায় নাম উঠেনি। অনেক কষ্টেই চলছি, কোনদিন না খেয়েও দিন কেটেছে। বয়স আর শারীরিক নানা অসুখে ভুগলেও ঠিকমতো ঔষধ কিনতে পারিনি। কিন্তু এখন সেই কষ্ট হয়তো কমবে, অন্তত কার্ডের টাকায় কিছুটা হলেও শান্তিতে থাকতে পারব।
Leave a reply