লাভ স্টোরি অনেক পছন্দ মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের। নভেম্বরের ভ্যানিটি ফেয়ারের কভারে এমনটাই বলেছেন তিনি। আর সেই প্রেমের টানে ফুল হাতে আবারও হাঁটতে যাচ্ছেন রেড কার্পেটে। এবার যেনতেন রেড কার্পেট নয়, পুরোদস্তুর রাজকীয় বিয়ের কনে তিনি! আর সেটা কোনো সিনেমায় নয়, বাস্তবেই।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের ছোট প্রিন্স হ্যারির সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত হয়ে গেছে। অনেক নেতিবাচক মন্তব্যও আসছে মিডিয়ায়। কিন্তু তাতে হ্যারি বা মেগান কেউই বিচলিত নন। তারা বিভোর বন্ধুত্বে, প্রেমে, আর ভবিষ্যতের স্বপ্নে।
অনেকের কাছে হ্যারি-মেগানের প্রেমের গল্পটা রূপকথার মতো মনে হতে পারে। ইর্ষাও কাজ করতে পারে। বিশেষ করে মেয়েরা ভাবতে পারেন নেহয়াৎ ভাগ্যগুণেই হ্যারির মন পেয়েছেন মেগান! আর ইর্ষা হবে না কেন! হ্যারি যে প্রিন্সেস ডায়নার ছোট ছেলে। হ্যারি বলেছেন, প্রথম দেখাতেই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, মেগানকে তার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। প্রথম দর্শনে এই প্রেম কিন্তু খুব বেশিদিনের নয়। গত বছর জুলাইয়ে তাদের প্রথম দেখা হয়।
জুলাই ২০১৬
এক বন্ধুর মাধ্যমে মেগান ও হ্যারির সাক্ষাৎ। সেখানে মেগান আগেই গিয়ে বসে ছিলেন। হ্যারি জানান, ওখানে গিয়ে মেগানকে দেখে খুব অবাক হয়েছিলেন তিনি। বন্ধুর মাধ্যমে এই ‘ব্লাইন্ড ডেট’ যে তার জীবনে বড় ঢেউ তুলবে তা তখনই বুঝে গিয়েছিলেন। কয়েক সপ্তাহ পর প্রিন্স হ্যারি মেগানকে নিয়ে ব্যক্তিগত বিমানে করে উড়ে সোজা বতসোয়ানা চলে যান। আর সেখানেই তাদের সত্যিকার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
অক্টোবর ২০১৬
আকাশে চাঁদ উঠলে কি আর লুকিয়ে রাখা যায়? রাজপরিবারের প্রেম-বিয়েও তেমনই। খবর চাউর গেল, হ্যারি-মেগান নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ করছেন। দ্যা সানডে এক্সপ্রেসে রিপোর্ট এলো, ‘রোমান্স প্রাথমিক ধাপ তবে প্রেম গভীর’। মেগান এ মাসে ইন্সটাগ্রামে একটি ছবি আপলোড করেন। দু’টো কলা জড়াজড়ি করে ঘুমিয়ে আছে- ছবিটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘গুড নাইট’। একে সবাই রোমান্টিক বলে ধরে নেয়, আর এই রোমান্টিকতা যে প্রিন্স হ্যারিকে ঘিরে, তা বুঝতে বাকি থাকে না কারো!
নভেম্বর ২০১৬
প্রেমের খবর জানাজানি হয়ে পড়ায় নানা রকম মন্তব্য আসতে থাকে। কিংস্টোন প্যালেসের বিবৃতিতে হ্যারি-মেগানের সম্পর্ককে স্বীকার করে নেয়া হয়। ছোট প্রিন্স মিডিয়ার ওপর ক্ষেপে যান কিছুটা। তার বান্ধবীকে নিয়ে জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় বর্ণবাদী আচরণের নিন্দা জানান। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের নিয়ে ট্রলেরও জবাব দেন। এদিকে, মেগানের ছবি তুলতে উদগ্রীব হয়ে ওঠে সাংবাদিকরা। বেচারিকে পুলিশের কাছে পর্যন্ত যেতে হয় এ কারণে। মেগানের আগের বয়ফ্রেন্ডদের পত্রিকা অফিসগুলো থেকে টাকা সাধা হয়, মুখরোচক গল্প জানার জন্য!
ডিসেম্বর ২০১৬
হ্যারি-মেগান জুটির হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি প্রকাশ করে দ্যা সান। ছবিটা তোলা হয়েছিল লন্ডনে। দু’জনে মিলে থিয়েটার দেখে ক্রিসমাস ট্রি কিনে বাড়ি ফেরেন!
ফেব্রুয়ারি ২০১৭
এবার পাপারাজ্জিদের হাতে ধরা খেলেন এই জুটি। রাতের বেলা ঘোরাঘুরির ছবি প্রকাশ হয়ে পড়ে।
মার্চ ২০১৭
হ্যারির বন্ধুর বিয়েতে অংশ নিতে মার্চে জ্যামাইকা যান এই জুটি। একসাথে বেশ অনেকটা সময় কাটান দ্বীপের ধারের হোটেলে।
মে ২০১৭
মে মাসে প্রিন্স হ্যারির সাথে পিপ্পা মিডলটনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যান মেগান। তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার জন্য রানী এলিজাবেথের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করেন হ্যারি। আর দ্রুতই পেয়ে যান সম্মতি।
আগস্ট ২০১৭
জেট বিমানে করে আবারও আফ্রিকায় পাড়ি জমান এই জুটি। চারিদিকে প্রিন্স হ্যারি আর মেগানের এনগেজমেন্টের গুঞ্জন! অনেকে বাজি ধরা শুরু করেন তাদের সম্পর্ক নিয়ে- বিয়ে হবে কি হবে না! আফ্রিকা থেকে ভিক্টোরিয়া ফলস দেখে বাড়ি ফেরেন তারা।
সেপ্টেম্বর ২০১৭
ভ্যানিটি ফেয়ারে সরাসরি প্রেমের কথা স্বীকা রকরেন মেগান মার্কেল। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই একটা সময় আসবে যখন আমরা এক সাথে হাজির হয়ে নিজেদের গল্পটা বলব।’
সেপ্টেম্বরেই হ্যারি ও মেগান একসাথে জনসম্মুখে আসেন। টরন্টোতে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। হাত ধরাধরি করে হাজির হন ক্যামেরার সামনে!
নভেম্বর ২০১৭
এ মাসেই মেগান তার হলিউডের জীবন পেছনে ফেলে রেখে লন্ডন পাড়ি জমিয়েছেন। প্রিন্স হ্যারির কিংস্টোন প্যালেসে থাকছেন তিনি। এ নিয়েও খবর ছড়িয়েছে বেশ। নভেম্বরের ২৭ তারিখে এনগেজমেন্টের অফিসিয়াল ঘোষণা দেন তারা।
মাত্র এক বছরের প্রেমের সম্পর্কের সুন্দর পরিণতি টানছেন তারা। মেগান ডিভোর্সি হওয়ায় নেতিবাচক গুঞ্জন চলছেই। এতো প্রেম নয় যেন যুদ্ধ! দেখা যাক, প্রিন্স হ্যারি এই নেতিবাচক মনোভাবকে প্রেমের সৌন্দর্য দিয়ে হারিয়ে দিতে পারেন কি না!
Leave a reply