দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা ২৬ মামলায় ‘ভুল আসামি’ হিসেবে তিন বছর জেলে কাটানো পাটকল শ্রমিক জাহালমের ঘটনায় নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে সংস্থাটির দেয়া এক প্রতিবেদনে দায় স্বীকার করে সংস্থাটি।
বিচাপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রতিবেদনটি দাখিল করেন।
২৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে দোষ স্বীকার করে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা, সরকারের পিপির সঙ্গে সমন্বয়হীনতার অভাবে এ ভুলের ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভুলে জাহালমকে আবু সালেক হিসেবে শনাক্ত করার ঘটনাটি ঘটে। আর দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভুল পথে চালিত করতে ভূমিকা রেখেছেন ব্র্যাক ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা এবং অ্যাকাউন্টের (ব্যাংক হিসাব) ভুয়া ব্যক্তিকে পরিচয় দানকারীরা।
এর আগে জাহালমকে কেন ক্ষতি পূরণ দেওয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
৩০ জানুয়ারি জাহালমকে নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে সে দিনই বিষয়টি বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে ‘ভুল আসামির’ কারাগারে থাকার ব্যাখ্যা জানতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতিনিধি ও আইন সচিবের প্রতিনিধিকে তলব করেন হাইকোর্ট।
শুনানি শেষে ৩ ফেব্রুয়ারি তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা পাটকল শ্রমিক জাহালমকে সোনালী ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তি দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, এই ভুল তদন্তে কোনো সিন্ডিকেট জড়িত কিনা, সিন্ডিকেট থাকলে কারা এর সঙ্গে জড়িত তা চিহ্নিত করে আদালতকে জানাতে হবে।
Leave a reply