গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদের তিস্তামুখ ঘাটে পানি বেড়ে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা, যমুনা, করতোয়া ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। আর তিস্তা ও ঘাঘট নদীর শহর পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। তবে যে কোন সময় কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা, ব্রক্ষপুত্র ও যমুনা নদীর তীরবর্তী গাইবান্ধা চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। এসব এলাকার কাঁচা রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে গেছে ধানের বীজতলা, পাট, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের জমি। পানি বৃদ্ধি আর তীব্র স্রোতের কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে এরেইমধ্যে চার উপজেলার অন্তত পাঁচ শতাধিক বসতভিটে, আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষরা।
তবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো চার উপজেলায় পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হলেও এখনো বন্যার প্রভাব পড়েনি।
তবে নিম্নঞ্চল ও চরাঞ্চলের কিছুকিছু বসতভিটেয় পানি ঢুকে পড়লেও আতষ্কিত না হওয়ার পরামর্শ জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে তাদের ত্রাণ সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরেই মধ্যে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নদী তীরের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবারের মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। সবচেয়ে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে সুন্দগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, সদরের কামারজানি, গোঘাট, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবারী, উড়িয়া ও গজারিয়াতে। হুমকির মুখে রয়েছে শতশত বসতভিটে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অনেকে তাদের সহায়-সম্পদ নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৪ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ও ঘাঘটের শহর পয়েন্টের পানিও বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। আরও দু-একদিন পানি বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা নেই। এ অবস্থায় নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
Leave a reply