ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীর আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ ১৩তম দিনের সোনাগাজী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হোসাইন, সোনাগাজী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইয়াছিন ও এ্যাম্বুলেন্স চালক নুরুল করিমের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জবানবন্দীতে মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসইন বলেছেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার স্বভাব চরিত্র খারাপ ছিল। ছাত্রীরা সিরাজের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় বিচার দিতো। ২৭ মার্চ নুসরাতের মা বিচার দিয়েছে সেটিও জানতেন।
সোনাগাজী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইয়াছিন তার জবানবন্দিতে বলেছে, ২৭ মার্চ (যেদিন নুসরাতকে যৌনহয়রানী করা হয়েছে) তিনি নুসরাতের মায়ের সাথে ছিলেন। নুসরাতের মা শিরিন আখতার ২৭ মার্চ সিরাজকে বেত দিয়ে মারধর করেছে। নুসরাত অধ্যক্ষের রুমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। নুসরাতের ভাই সিরাজকে মারধর করার চেষ্টা করছিল। এ্যাম্বুলেন্স চালক নুরুল করিম তার জবানবন্দিতে বলেছে, ৬ এপ্রিল নুসরাতকে ঢাকা নেয়ার সময় যে কথাগুলো বলেছে, কীভাবে তাকে নিচ থেকে ওপরে নিয়ে গেছে সে কথাগুলো তিনি শুনেছেন। আদালতকে সে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন।
এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরে নুসরাতের বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠি নাসরিন সুলতানা, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা দোকানদার জসিম উদ্দিন, দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ, নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান, জহিরুল ইসলাম, হল পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, নুসরাতের মা শিরিন আখতার ও শিক্ষক আবুল খায়ের, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি সাবেক সদস্য শেখ আবদুল হালিম মামুন ও সোনাগাজী মাদ্রাসার দপ্তরি মো. ইউসুফ, সোনাগাজী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হোসাইন, সোনাগাজী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইয়াছিন ও এ্যাম্বুলেন্স চালক নুরুল করিমের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
Leave a reply