রুয়েট শিক্ষকের উপর হামলা, তদন্ত করছে পুলিশ

|

রাজশাহী ব্যুরো:

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম এর উপর হামলার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

গত রোববার ঘটনার পরদিন সামাজিক মাধ্যম সহ বিভিন্ন মাধ্যমে বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বিষয়টি জানতে পেরে নিজেই সাধারণ ডায়েরী করেন।

ঘটনার পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেও ঐ শিক্ষক পুলিশকে অবহিত করা বা কোন আইনি প্রক্রিয়ায় যাননি।

বোয়ালিয়া থানার ওসি তদন্ত মাহবুব হোসেন জানান,বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষক রাশিদুল ইসলামকে তদন্তে সহযোগিতার জন্য হয়েছিলো।

শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম এসে কোথায় ঘটনাটি ঘটেছিলো সেটি দেখিয়েছে। তার বর্ণনামতে, সোনাদীঘি মসজিদের সামনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ওসি তদন্ত জানান,আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করা হচ্ছে। যেহেতু ঈদের আগে ওই এলাকায় অনেক ভীড় ছিলো সেকারণে সময় লাগছে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, আমরা ওই এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সাথেও কথা বলেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রত্যক্ষদর্শী পাইনি। তবে আমরা গুরুত্ব-সহকারে বিষয়টি দেখছি, দ্রুতই তদন্ত সম্পন্ন হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ হয়েও যদি পুলিশ কিংবা আইনের প্রতি আস্থা রাখতে না পারে সেটি দুঃখজনক। ঘটনার পরপরই তিনি পুলিশকে জানালে তদন্ত অনেক সহজ হতো।

এনিয়ে শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি গণমাধ্যমে কোন কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১০ আগস্ট রুয়েটের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম তার ফেসবুক ওয়ালে হামলার ঘটনাটি জানান দেন। ঘটনার বিবৃতি দিয়ে ফেসবুকে রাশিদুল ইসলাম লেখেন,

‘মেনে নিন নয়তো দেশ ছেড়ে চলে যান।

এদেশে আপনার চোখের সামনে আপনার মা, বোন অথবা বউ ধর্ষিত হলেও প্রতিবাদ করবেন না,আশেপাশে কাউকে পাবেন না। মার খেয়ে মরবেন।

কারণ আপনি একটা জানোয়ার,আমিও একটা জানোয়ার,জানোয়ারে ভরা সমাজ আমাদের।

আজকের ঘটনাটা সংক্ষেপে বলি। সাহেব বাজার মনিচত্বর এর মত জনবহুল এলাকাতেও আমার বউ হেনস্তার শিকার হয়। এক পাল ছেলের মধ্যে একজন আমার বউকে পেছন থেকে কয়েকবার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়। দুই-তিনবার সহ্য করলেও পরের বার প্রতিবাদ করি। ব্যাস, সোনার ছেলেদের দাপট শুরু। শেষে আমাকে সোনাদীঘি মসজিদের সামনে ৫-৭ মিলে ঘিরে ধরে মারা শুরু করে। এই পর্যন্ত না হয় মেনে নিলাম।

কিন্তু ওখানে কম করে হলেও ৫০ জন আমার মার খাওয়া দেখছিলো। একজনও এগিয়ে আসেনি। মার খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলি,‘বাঁচান আমাকে’,কোন রেসপন্স পাইনি। একজন মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার মার খাওয়া দেখছিলো,আমি সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেলো।

মার খেয়ে কাপুরুষ আমি দর্শকদের বলি,’আপনারা আজ এগিয়ে এলেন না,একদিন আপনার বউয়ের সঙ্গে এমন হলেও কেউ এগিয়ে আসবে না। ও আমার বউ,গার্লফ্রেন্ড না,কাবীননামা দেখাতে হবে আপনাদের?

এ সময় একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে বসলো,’হ্যাঁ,কাবীননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে।’

ধরেন, দ্বিতীয়বার আক্রমণে ওরা আমাকে মেরে ফেলল। কি করবেন? ফেইসবুকে কান্নাকাটি? জাত গেল জাত গেল রব তুলবেন? কোনোটাই করবেন না দয়া করে, এতে কিছু আসে যায় না। আর যারা করবে, তাদের গিয়ে থুথু দিয়ে আসবেন।

ধরেই নিয়েছিলাম,পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরবো,মা-বাবা চান না বাইরে সেটেল হই। এই ঘটনার পর দ্বিতীয়বার ভাববো অবশ্যই।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply