নগরীতে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড রোদ আর বর্ষায় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে যাত্রী ছাউনি। কিন্তু সেই যাত্রী ছাউনিতে এখন যাত্রীদের অপেক্ষার পরিবর্তে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করেন দোকানিরা।
পল্টন মোড়ে দারুস সালাম মার্কেটের সামনে যাত্রী ছাউনি দখল করে বসানো হয়েছে বই-পুস্তকের দোকান। তার পাশে পল্টন মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা ও ফুটপাতেও বিভিন্ন দোকান বসানো হয়েছে। ব্যস্ততম এ এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ায় মূল সড়ক সরু হয়ে গেছে। ফুটপাত দখল থাকায় পথচারীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। ফুটপাতে মানুষের জটলা লেগে যাচ্ছে। অন্যদিকে আজাদ প্রোডাক্টসের সামনের অংশে দখল করে বসেছে বিভিন্ন ধরনের ফলের দোকান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) এবং ডিএসসিসির বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক মেগা প্রকল্পের আওতায় এসব যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, ‘পল্টন পুস্তক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ ফুটপাত দখল করে গড়ে তোলা বই ও বিভিন্ন স্টেশনারির দোকান বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এ সংগঠনটি ১৯৯৯ সালের ২১ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংগঠনে ৩১ জন সদস্য রয়েছে। তাদের দোকান ছাড়া অন্য কেউ এখানে দোকান বসাতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে তারা এখানে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। জুবায়ের হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, যাত্রী ছাউনিতে কেউ বসতে না পারলেও বৃষ্টির সময় যাতে অপেক্ষা করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। মতিঝিল অফিসে যাওয়ার সময় এ রাস্তায় যানজট থাকে। তাই সব সময় হেঁটে যাই। এখানকার দোকানের কারণে সমস্যা আরও বেশি হয়। অনেক সময় মানুষের ভিড়ে ছিনতাই চক্র মানিব্যাগ ও মোবাইল চুরি করে।
এক বই বিক্রেতা বলেন, আমরা ১০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। দৈনিক বসার ভাড়া বাবদ দিনে ৫০ থেকে ১০০ টাকা লাইনম্যানকে দিতে হয়। আর সমিতির চাঁদা মাসে ৬০০ টাকা।
পল্টন পুস্তক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ বলেন, ছাত্রী ছাউনিতে যাত্রী বসার জন্য যে বেঞ্চ থাকে সেটা নেই। তাই আমাদের লোকজন এখানে দোকান বসিয়েছে। আমরা ফুটপাতে ব্যবসা করে খাই, হকার আন্দোলনের পর এমনভাবে দোকান বসানো হয়েছে, যাতে মানুষের হাঁটতে কোনো সমস্যা না হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছি। এ অভিযান চলমান রয়েছে। তবে পল্টনের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনি বলেছেন ভালো হয়েছে। আমরা দ্রুত এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব। যাতে মানুষের চলাচলে কোনো অসুবিধা না হয়।
Leave a reply