বিয়ের পর স্ত্রীকে স্বামীর ধর্ম গ্রহণ করতে হবে এমনটা মনে করে না ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। একারণে বম্বে হাইকোর্টের দেয়া এক রায় পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত।
কী বলা হয়েছিল বম্বে হাইকোর্টের ওই রায়ে? বম্বের হাইকোর্ট রায়ে, এক পার্সি মহিলাকে প্রথা মেনে তাঁর বাবা-মায়ের শেষকৃত্য করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, যেহেতু তাঁর হিন্দু ধর্মের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। ওই আদালত মনে করে, বিয়ের পর স্বামীর ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গেই মিশে যায় স্ত্রীর ধর্ম।
গুলরোখ এম গুপ্তা নামে ওই মহিলাকে ধর্মীয় রীতি মেনে সেখানকার ‘টাওয়ার অফ সাইলেন্সে’ ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, বিয়ে কখনওই একজন মহিলার নাগরিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। বিচারপতিরা স্পষ্টভাষায় জানান, ‘বিয়ের অর্থ এই নয় যে একজন মহিলা নিজেকে স্বামীর কাছে বন্ধক রাখছে। আমরা এই ধর্মীয় সংযুক্তির পক্ষে নই। এমন কোনও আইন নেই যেখানে মহিলাদের অন্য ধর্মে বিয়ে হওয়ার জন্য টাওয়ার অফ সাইলেন্সে ঢুকতে বাধা দেওয়া যায়।’
৮৪ বছরের বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তাঁদের শেষকৃত্যের জন্য হাইকোর্টের অনুমতি চেয়েছিলেন গুলরোখ। এতে বিবাদী পক্ষ ছিল সেখানকার একটি ট্রাস্ট, নাম ভালসান্দ ট্রাস্ট। তবে ট্রাস্টের পক্ষে রায় দিয়ে বম্বে হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল, বিয়ের পর স্বামীর ধর্মই হয়ে যায় স্ত্রীর ধর্ম। শেষ পর্যন্ত গুলরোখ নামের ওই পার্সি মহিলা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অনড় মনোভাব থেকে সরে এসে বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের আবেগকে অনুভব করার জন্য ভালসান্দ ট্রাস্টের কাছে অনুরোধ করেছে শীর্ষ আদালত।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply