নারী অফিস সহকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের ঘটনায় বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের শুদ্ধাচার সনদ কেড়ে নেয়া হবে।
নারী অফিস সহকারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার তাকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়।
দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তদন্ত করে সাবেক এ ডিসি ও নারী সহকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আহমেদ কবীরকে এর আগে শুদ্ধাচার পদক দেয়া হয়েছিল। সেটি ফিরিয়ে নেব। যাতে এ ধরনের কাজ ভবিষ্যতে অন্য কেউ না করতে পারে। আগামীতে ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে নৈতিকতা বিবেচনা করে নিয়োগ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন যুগ্মসচিবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কমিটি ভালোভাবে তদন্ত করে, বুঝে, কী ঘটেছে সেখানে, কতটুকু অনৈতিকতা সেখানে হয়েছে- সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দেবে। সেটির ভিত্তিতে আমরা এক্সামপ্লিয়ারি একটা প্রিম্যাটিক মেজার্স নেব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জামালপুরের ডিসি অনৈতিক কাজ করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হযেছে। অধিকতর তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী সময় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘পাশাপাশি যে নারীর নাম এসেছে তাকেও তদন্তের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, জেলায় একজন ডিসি অনুকরণীয় ব্যক্তি। তার কাছ থেকে এ রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ড কাম্য নয়। তার বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো শাস্তি তার হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটিই হবে। আশা করছি আমরা দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব’-যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ।
সম্প্রতি জামালপুরের ডিসির একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন ডিসি আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক।
অপর এক আদেশে পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হককে জামালপুরের নতুন ডিসি নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আহমেদ কবীরকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
(সূত্র: যুগান্তর)
Leave a reply