যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদ হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। প্রতিবাদকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সততা নিয়ে। এ প্রশ্নে জাতিসংঘে এক ধরনের কোনঠাসা হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বুধবার জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে একতরফা স্বীকৃতি দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’দিন পর হোয়াইট হাউজের সামনেই ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে জুমার নামাজ আদায় করলেন ওয়াশিংটনের কয়েকশ’ মুসলিম।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বে প্রকৃতপক্ষে ফুঁসে উঠেছে পুরো বিশ্ব। আরব রাষ্ট্রগুলোর পাশাপাশি, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ ইউরোপ-এশিয়ার দেশে দেশে গত দুই দিন বিক্ষোভ করেছেন লাখো মানুষ।
জাতিসংঘেও সব মহলের চাপের মুখে আছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সিদ্ধান্তকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার পথে বাধা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে দেশগুলো।
জাতিসংঘে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ম্যাথু রিক্রফট বলেন, ‘পূর্ব জেরুজালেম অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডের অংশ। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সম্মতি ছাড়া জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ১৯৬৭ সালে নির্ধারিত সীমানায় কোনো পরবির্তন মেনে নেবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এমন কর্মপরিকল্পনা ধরে এগোতে হবে যেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন- দু’রাষ্ট্রেরই রাজধানী হয় জেরুজালেম। তার আগ পর্যন্ত জেরুজালেমের সার্বভৌমত্ব আমরা স্বীকার করি না।’
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের জার্মান রাষ্ট্রদূত ক্রিস্তফ হিউসেন বলেন, ‘অস্থির পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সব পক্ষ ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে শান্ত থেকে সংকটের সমাধান করতে হবে। সংঘাতের অবসান চাই। দ্বি-জাতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যাপারে যে আশ্বাস ট্রাম্প দিয়েছিলেন তা তাকে মনে করিয়ে দিতে চাই। আন্তর্জাতিক নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’
জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত নিকোলাই ম্লাদেনোভ বলেছেন, ‘ধর্মীয় তাৎপর্যের কারণে জেরুজালেমকে নিয়ে যে আবেগ রয়েছে, তা না বোঝার কোনো কারণ নেই। যা ঘটছে তা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রবাদ আরও চরম রূপ নিতে পারে। রাষ্ট্রগুলো শান্তির বদলে একতরফা ব্যবস্থা নিতে শুরু করবে, এমন ঝুঁকিও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
Leave a reply