রাজধানীর মতিঝিলে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বংশাল থানা পুলিশের কনস্টেবল আল মামুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মতিঝিল থানার ডিউটি অফিসার এসআই হাফিজ জানান, এ মামলায় বংশাল থানা পুলিশের কনস্টেবল আল মামুনসহ জিতু নামে এক ব্যক্তি এবং এক অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি জানান, বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মতিঝিল থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশ কনস্টেবল আল মামুনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে আসেন আবুল কালাম আজাদ নামে এক ব্যক্তি।
তার অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে ইতিমধ্যে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আল মামুন জানান, ছিনতাই নয়, আবুল কালাম আজাদের পাওনা টাকা তুলে দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি মতে, বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মতিঝিল এনআরবিসি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোহামেডান ক্লাবের সামনের সড়কে এলে তিনজন পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চান। এতে বাধা দিলে মামুন তার হাতে থাকা হ্যান্ডকাপ দিয়ে আজাদের মাথায় আঘাত করেন। পরে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় জনতা দুজনকে ধরে ফেললেও একজন পালিয়ে যান।
মতিঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল বর্তমানে বংশাল থানায় কর্মরত। পাওনা টাকা তুলে দেয়ার কথা বললেও প্রাথমিক তদন্তে এখনও মামুনের বক্তব্যের সত্যতা পাইনি আমরা। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে উদ্ধারকৃত টাকার মোট পরিমাণ ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন মতিঝিল থানার ওসি ওমর ফারুক। তাই টাকাটির উৎস বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। এ টাকা হুন্ডি মারফত এলো কিনা তাও তদন্ত করেছি। তদন্ত প্রমাণে তা হুন্ডির নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ওসির বক্তব্যের বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ জানান, টাকার অঙ্ক ১০ হাজার টাকার বেশি বলে ফেলেছিলাম। তাই পুলিশের সন্দেহ হয়েছে। টাকার উৎস কী? কে দিয়েছে, কার টাকা, এত টাকা তুলে একা যাচ্ছিলেন কেন? এটি হুন্ডির টাকা নয়তো? ইত্যাদি প্রশ্ন করে।
তিনি বলেন, এই টাকা আমার। আমার ব্যবসায়িক পার্টির পাঠানো টাকা আমি ব্যাংক থেকে তুলেছি। তবে ব্যাংক থেকে বেরোনের সময় আলাদা ১০ হাজার টাকা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখি, যা যোগ করে বলতে ভুলে গেছিলাম।’
তিনি যোগ করেন, টাকার অঙ্ক যাই হোক, পুলিশ মামুন যদি আমাকে উপকারই করতে আসত তা হলে সেদিন টাকা নিয়ে থানার দিকে না এসে উল্টো দিকে দৌড় দিয়েছিলেন কেন? তখনই তো জনতা তাকে হাতেনাতে ধরে।
অভিযুক্ত আল মামুন পুলিশের গাড়িচালক বলে জানিয়েছেন মতিঝিল থানার কয়েকজন কর্মকর্তা।
তারা জানান, কিছুদিন আগে তিনি বংশাল থানায় বদলি হয়েছেন। এর আগে তিনি মতিঝিল থানায় তিন বছর চাকরি করেছেন। তাই মতিঝিলে তার পরিচিতি ও প্রভাব রয়েছে।
Leave a reply