শতবর্ষী মায়ের ঠাঁই হলো না সন্তানদের ঘরে!

|

সাবিনা খাতুন, বয়স প্রায় ১০০ বছর। বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহরাদপুর ইউনিয়নের মারতা গ্রামে। স্বামী মৃত নিয়ত আলী। দুই ছেলে নূর মোহাম্মদ ও আহাম্মদ। তিন মেয়ে মোমেনা, হালিমা ও সোলেমা।

জমি, কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি সবই আছে। বাড়িভর্তি মানুষ, সবার থাকার জন্য ঘরে জায়গা হয়। কিন্তু প্রায় শতবছর বয়সী জন্মদাতা বৃদ্ধার মা সাবিনা খাতুনের জন্য ঘরে জায়গা নেই!

গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখলা সড়কের পাশে মারতা গ্রামের ভাঙ্গীবাড়ি সাবিনা খাতুনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে একটি কলাবাগান। ওই বাগানের উত্তর পাশে ৫-৬ ফিটের ছোট্ট একটি ছাপড়াঘর। ওই ঘরে ঝাঁপ লাগিয়ে ঘুমাচ্ছেন সাবিনা খাতুন। মাথার ওপর ছোট একটি জালি ফ্যান থাকলেও তা অন-অফের কোনো সুইস নেই।

সাবিনা খাতুন বলেন, অনেক আউশ করে ছেলের নাম রেখেছিলাম নূর মোহাম্মদ। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি সবই আমার আছে।

ছেলেরা কেন তাকে এখানে রেখেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলতে পারব না।

খাবার-দাবারের কথা জানতে চাইলে সাবিনা খাতুন বলেন, দিনে একবার খাবার দিয়ে যায় ওটাই সারাদিন খাই। ছাপড়াঘরের পূর্ব পাশে সাবিনা খাতুনের বড় ছেলে নূর মোহাম্মদের পাকা বাড়ি।

ছাপড়া থেকে ওই বাড়িতে যাওয়ার সরাসরি কোনো রাস্তা নেই। খানিক উত্তর দিকে একটু হাঁটলে ছোট ছেলে আহাম্মদের বাড়ি। পশ্চিম দিকে এলে বড় মেয়ে মোমেনা বেগমের বাড়ি।

আহাম্মদ আলীর স্ত্রী জরিনা জানান, তার শাশুড়ির মাথা খারাপ, কাছে রাখলে সারারাত তারা ঘুমাতে পারেন না। দরজা-জানালায় বাইরাবাইড়ি করেন। তাই তাকে দূরে এক ঘরে রাখা হয়েছে।

ছেলে নূর মোহাম্মদ জানান, মা সাবিনা খাতুন ও তার ছোটভাই আহাম্মদ মিলে তার সঙ্গে অনেক দুর্ব্যবহার করেছে, জমি লিখে নিয়েছে। তার পরও তিনি তার মায়ের দেখাশোনা, ভোরণ-পোষণ সবই করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply