অস্ত্র ও ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল আলম ফিরোজের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে ফিরোজের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাফটকে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ধানমণ্ডি থানায় দায়েরকৃত অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় শফিকুল আলম ফিরোজের ১০ দিন করে মোট বিশদিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে এই দুই মামলায় ৫ দিন করে মোট দশদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শনিবার ভোরে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে মামলা দুটি করেন র্যাব-২ এর পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল হামিদ খান। পরে ফিরোজকে ধানমণ্ডি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিকুল আলম ফিরোজ একাদশ সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
রাজধানীর ফকিরাপুল ইয়াংমেন্স ক্লাব ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অভিযানের পরদিন শুক্রবার রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ সময় আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে ধানমণ্ডি ক্লাবের বার ২৪ ঘণ্টার জন্য সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া এদিন এজাক্স ক্লাব ও কারওয়ান বাজার মৎস্যজীবী ক্লাব ঘিরে রাখলেও ক্লাব দুটি বন্ধ থাকায় শেষ পর্যন্ত অভিযান স্থগিত করে র্যাব।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নিকেতনে যুবলীগ নেতা ঠিকাদার জিকে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযানের শেষ পর্যায়ে র্যাবের আরেকটি দল কলাবাগান মাঠের পাশে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ঘিরে রাখে। এ সময় র্যাব-২-এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগেই কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
পরে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. গাউসুল আজমের নেতৃত্বে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে সঙ্গে নিয়ে এসে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান শুরু করে র্যাব।
অভিযান শেষে র্যাব-২-এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন। তিনি জানান, রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনো, জুয়ার আড্ডা ও বারের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালানো হচ্ছে, এরই চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কলাবাগান ক্লাবে অভিযানটি চালানো হয়।
অভিযানে বেশ কিছু জুয়া খেলার কয়েন, প্লেয়িং কার্ডের ৫৭২টি সেট, আটশ’ হলুদ রঙের ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলি, একটি ম্যাগাজিন জব্দ করা হয়। ক্যাসিনোর সরঞ্জাম এখানে ছিল না। তবে ক্যাসিনোতে ব্যবহার করা হয় এমন কয়েন পাওয়া গেছে।
আশিক বিল্লাল বলেন, জব্দ হওয়া ইয়াবাগুলো প্রচলিত ইয়াবা থেকে আলাদা ধরনের। এর কোনো গন্ধ নেই। অস্ত্র ও ইয়াবাগুলো ক্লাবটির সভাপতি শফিকুল আলমের অফিস কক্ষ থেকে পাওয়া গেছে। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ক্লাব থেকে হারুন, আনোয়ার, হাফিজুল ও লিটন নামে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা ক্লাবের স্টাফ। এদের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনসহ একাধিক মামলা করার কথা জানান তিনি।
Leave a reply