অবশেষে গাইবান্ধার দুর্নীতিবাজ সেই পিআইওকে বদলি

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের দুর্নীতি-লুটপাটসহ নানা অনিয়মে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকারকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তাকে আগামী ১৬ অক্টোরের মধ্যে কর্মস্থল চট্রগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় যোগ দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাকে তাৎক্ষণিক কর্মবিমুখ (ষ্টান্ড রিলিজ) হবে বলেও আদেশপত্রে উল্লেখ করা হয়।

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-সচিব (উপ-পরিচালক-প্রশাসন-২) লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলির আদেশ দিয়েছেন। পিআইও নুরুন্নবীর বদলির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা আলহাজ মো. ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থ ও প্রশাসণিক কারণে পিআইও নুরুন্নবীকে সুন্দরগঞ্জ থেকে বদলি করে চট্রগ্রামের সন্দ্বীপে যোগদানের আদেশ জারি করেছে সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর’।

এরআগে, চলতি মাসের ৬ সেপ্টেম্বর ‘লাঘামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির মামলার পরেও দাপট-দাম্ভিকতায় বহাল তবিয়তে পিআইও এবং ১৮ সেপ্টেম্বর ‘দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন পিআইও নুরুন্নবী’ শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনে দুটি প্রতিবেদন প্রচার হয়। অভিযোগের বক্তব্য নিতে গিয়ে পিআইও’র তোপের মুখে পড়েন যমুনার গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ। পরে প্রতিবেদন প্রচারের পর পিআইও’র খুঁটির জোর নিয়ে তোলপাড় ও ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সংবাদ প্রকাশে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

২০১৫ সালে সুন্দরগঞ্জে যোগদানের পর থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটে জড়িয়ে পড়েন পিআইও নুরুন্নবী। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পিআইও নুরুন্নবীর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে প্রমাণ পায় সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। দুর্নীতি-লুটপাটের ঘটনায় ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৮ অর্থ বছরে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক চারটি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে স্থানীয় এক ঠিকাদারের দায়ের করা একটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারধীন। দুর্নীতি ও মামলার কারণে তাকে বদলিও করা হয়। কিন্তু আদালতে মামলা করে সেই বদলির আদেশ ঠেকায় পিআইও নুরুন্নবী।

এরপর থেকে আরও বেপরোয়া অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাট এবং ক্ষমতার দম্ভসহ বিভিন্ন কারণে বেশ আলোচিত-সমালোচিত হয়ে উঠেন পিআইও নুরুন্নবী। দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যে তিনি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও ঘুষ বাণিজ্যে পিআইও’র আস্থাভাজন হয়ে উঠেন পৌর এলাকার আবদুল হালিম। আবদুল হালিম অফিসে বসেই নিয়মিত করতেন দেনদরবারসহ দাপ্তরিক কাজও। ফলে অল্প সময়ে দিনমজুর থেকে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হন আবদুল হালিম। তবে সংবাদ প্রচারের পর থেকে অনেকটাই লাপাত্তা হালিম। এমনকি তাকে অফিস ও আশপাশের এলাকাতেও দেখা যাচ্ছেনা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply