সেই রক্ষকই ভক্ষকের গল্প! এবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল খোদ ভারতের এক আইপিএস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের ওই আইপিএস (ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস) কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন এক মহিলা।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির বাসিন্দা ওই মহিলা ২০১৮ সালে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে দাখিল করা হয়েছে ফাইনাল চার্জশিট। দাখিল করা চার্জশিট অনুযায়ী, মহিলার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করেন ওই আইপিএস কর্মকর্তা। ফেসবুকে বন্ধু হওয়ার পর বেশ কয়েকবার মহিলার সঙ্গে চ্যাট এবং ভিডিও কল করেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁদের বন্ধুত্বে মাখামাখি হলে, ওই কর্মকর্তা অভিযোগকারী নারীর সাথে গত ২৭ জানুয়ারি দিল্লিতে সাক্ষাৎ করেন।
অভিযোগ, আইপিএস কর্মকর্তা তাঁকে বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন। তাঁদের প্রথম সাক্ষাতে, দুজনে বসন্ত কুঞ্জের একটি মলে গিয়ে একসঙ্গে ডিনার করেন।
পরের দিন যখন তাঁদের আবার দেখা হয় তখন ওই আইপিএস কর্মকর্তা মহিলাকে কিছু চকলেট ও মদ খাওয়ার প্রস্তাব দেন। মদ্যপানের পর মহিলা বেসামাল হয়ে পড়লে তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে আসেন তিনি, এবং সেখানেই তাঁর সঙ্গে আপত্তিকর কার্যকলাপে রত হন। মহিলা জানিয়েছেন তিনি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেও বিফল হন। নিগৃহীতা মহিলার সম্পূর্ণ বিবৃতি চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়, মহিলাকে ধর্ষণ করার পরে ওই পুলিশকর্তা তাঁর কাছে ক্ষমা চান এবং তাঁকে বিয়ে করার আশ্বাসও দেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার পরে তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরে তিনি মহিলাকে উপেক্ষা করতে শুরু করেন। চার্জশিট অনুসারে, ওই আইপিএস অভিযোগকারিনীকে সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্লক করে দেন এবং তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
এরপরে বাধ্য হয়েই গত বছরের মে মাসে পুলিশে যোগাযোগ করে অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীতা এবং বারখাম্বা থানায় আইপিএসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি ক্রাইম ব্রাঞ্চে স্থানান্তর করা হয়।
প্রাথমিকভাবে, এই পুলিশকর্তা দিল্লিতে নিজের উপস্থিতি সম্পর্কে অস্বীকার করলেও পরে জেরায় স্বীকার করেন যে তিনি শহরে এসে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করেন। তবে তিনি এও দাবি করেন যে ওই দিন মহিলা তাঁর সঙ্গে ছিলেন না এবং তিনি একাই হোটেলে ফিরে আসেন, জানিয়েছেন ঘটনার তদন্তকারী এক আধিকারিক ।
এর আগে ওই আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে চার্জশিটের ১২ কলামে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয় তবে পরে তাঁর বিরুদ্ধে ফোন কলের রেকর্ড ও অন্যান্য প্রমাণ মেলায় চূড়ান্ত চার্জশিটে ১১ নম্বর কলামে অভিযুক্ত হিসাবে তাঁর নাম রাখা হয়েছে। ওই তদন্ত আধিকারিক আরও জানান যে, ঘটনার সময় হোটেলটিতে ওই মহিলার সঙ্গে যে তিনি ছিলেন তার প্রমাণও মিলেছে।
ওই মহিলা এই মামলায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন এই মর্মে যে অভিযুক্ত আইপিএস অফিসার হিসাবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এবং তাঁর এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং সোনিপতে তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন।
ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি বলে জানা গেছে।
সূত্র: এনডিটিভি।
Leave a reply