স্বাধীন বাংলাদেশে উন্নয়নের গতির সাথে তাল মিলিয়ে কমার কথা ছিল ধনী-গরিবের বৈষম্য। কিন্তু গেল ৪৬ বছরে তা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন টেকসই করতে হলে আয় বৈষম্যে ঘোচানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষার গুণগত মান। না হলে, মুক্তিযুদ্ধের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও লক্ষ্য অর্জন পুরোপুরি সম্ভব নয়, এমন অভিমত অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের।
তিনভাগের দু’ভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে লাল সবুজের পতাকা উর্দ্ধে তুলে ধরেছিল সাড়ে সাত কোটি বাংলাদেশি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা ছিল মাত্র দু’জন। বিজয় অর্জনের ৪৬ বছরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার অনেকটা কমলেও এখনও দেশের ২৪ ভাগ মানুষ দরিদ্র-হত দরিদ্র। বিপরীতে দু’জন থেকে বেড়ে কোটিপতির সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি।
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, গত ৫/৬ বছরেই ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ যোগ হয়েছে কোটিপতির ক্লাবে। তবে কী মুক্তিযুদ্ধের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা অধরাই থেকে যাবে?
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেক বেড়েছে। এটা আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু পরিবারের হাতে বেশির ভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ৬ দফা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে আয়ের বৈষম্য বাড়ছে, এটা একটা আশঙ্কার বিষয়।
ধারাবাহিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের বেশি হওয়ায় বেড়েছে গড় জীবন যাত্রার মান, বেড়েছে মধ্যবিত্তের সংখ্যা। বর্তমানে ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী অর্থাৎ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু শিক্ষা-দীক্ষায় কতটা দক্ষ মানবশক্তি তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ?
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের মতে, দেশে শিক্ষার প্রসার হয়েছে, তবে শিক্ষার মানের অবনতি হয়েছে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
পুষ্টিমান বেড়েছে বলে মন্তব্য করলেও তার মতে শিশু ও মায়েদের অপুষ্টিজনিত সমস্যাকে এখনও রয়েই গেছে। এই জায়গায় আরও উন্নতি করতে হবে বলে মত দেন এই প্রবীণ অর্থনীতিবিদ।
তার মতে, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম প্রবাসী দিয়ে কয়েকগুণ বেশি রেমিট্যান্স আয় করছে ফিলিপাইনসহ অনেক দেশ।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply