সম্রাট শুরু থেকেই ‘সম্রাট’। ও শুধু নামে সম্রাট- এমন না, কাজেও সম্রাট। আর যে সহসভাপতি বা অন্য কেউ আছে, ওদের মতো না ও। আগে থেকেই ও চলাফেরা খুব ভালো ভালভাবে করতো। এসব কথা বলেছেন র্যাবের হাতে আটক হওয়া আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী।
রোববার দুপুরে সম্রাটের মহাখালীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখানেই যমুনা নিউজের সাথে কথা বলেন সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন।
এদিকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সম্রাটপত্নী। তিনি বলেন, আমাদের দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে এই অভিযানের জন্য ব্যক্তিগতভাবে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাবো। তিনি যদি আরও আগে উদ্যোগ নিতো তাহলে আরও ভাল হতো।
সম্রাট নিয়মিত সিঙ্গাপুর কেন যেতেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন চৌধুরী বলেন, ও সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতেই যেত। জুয়া খেলা ওর নেশা, কিন্তু সম্পদ জমানো তার নেশা না। দোকান, গাড়ি এগুলো তার নেশা না।
শারমিন জানান, ২ বছর ধরে সম্রাটের সাথে তার যোগাযোগ নেই। তার দাবি, ওর সম্পদ বলতে কিছুই নাই। ও যা ইনকাম করে ক্যাসিনো চালিয়ে, সব দলের জন্য খরচ করে। দল পালে, আর যা থাকে তা দিয়ে সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলে। সম্পদ বলতে কিছুই নেই। আগে যেমন ছিল এখনও তেমন। সম্রাটের কোনো নেশা নেই ফ্ল্যাট, বাড়ি, গাড়ির প্রতি। ওর একমাত্র নেশা জুয়া খেলা।
যোগাযোগ না থাকলে ক্যাসিনো বিষয় কীভাবে জানেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বোঝাই যায়, জনপ্রিয়তার দেখলে বোঝা যায়, আর এরকম জনপ্রিয়তা কোন নেতার আছে বলেন? আর কোনো নেতার এমন জনপ্রিয়তা নেই। উত্তরা একজন আছে নিখিল নামে, ওর এরকম জনপ্রিয়তা নেই।
যোগাযোগ না থাকার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার সাথে ওর একটু মিলতো কম। ও ছেলেপুলে নিয়েই থাকতে বেশি পছন্দ করত। আরো চাইতো না আমি কোনো ক্যামেরার সামনে আসি আমি, ওপেন ফেস হই। আর আমি শুরু থেকে নামাজটা পড়তে পছন্দ করতাম, বাসায় থাকতে পছন্দ করতাম। ও চাইত আমি এভাবেই চলি চলি।
আগে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেলেও দু’বছর ধরে সম্রাট তাকে সাথে নেয় না বলে জানান শারমিন চৌধুরী। বলেন, দু’বছর ধরে সিঙ্গাপুরে নেয় না, ওখানে বোধহয় একটা চায়না প্লাস মালয়েশিয়ান মিক্স একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়েছে। ও গেলে তার সাথেই সময় কাটায় আরকি।
বিভিন্ন নারীদের সাথে তার মেলামেশার অভিযোগ নাকচ করে শারমিন চৌধুরী বলেন, না, বিভিন্ন নারীর সাথে না। আমাকে ২ বছর ধরে সিঙ্গাপুরে নেয় না। ওখানে বোধয় চায়না ও মালেশিয়ান বংশোদ্ভুত মিক্স একটা মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক হয়েছে। সিঙ্গাপুর গেলে ওখানে ওর সাথেই সময় কাটাতো।
সম্রাটের আর কয়টি বাড়ি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে আমার জানামতে শান্তিনগরের বাসা, এই বাসা আর ডোমিনাতে একটা ফ্ল্যাটে চার বছর আগে স্লো ভাবে দেয়া শুরু করছে, এখানে ৩০ নম্বরে। শান্তিনগরের তার অফিস সেটা তার নিজস্ব অফিস, যে ফ্লোরে তিনি বসতেন। বাকিগুলো আস্তে আস্তে খালি হয়ে গেছে।
সম্রাট মহাখালী যান না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ও এখানে আসে না ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী সিঁড়ি ভাঙা নিষেধ। দেখা করতে হলে আমি কাকরাইলে যেতাম। অভিযানের পর আমার সাথে যোগাযোগ করে নাই ও সবসময় ভাবতো আমি বোকা, আমি সব বলে দিব, আমাকে কিছুই বলেনি।
শারমিনের দাবি, সম্রাট চাইতো না অবৈধ টাকা সংসারের খরচ করতে। সে চাইতো না তার পরিবারের লোকজন অবৈধ টাকায় চলুক। সেজন্য সেসব টাকা দলের পেছনেই খরচ করতো। যুগ পাল্টেছে। টাকা না দিলে ছেলেপুলে আসে না। তাই সে সেখানেই খরচ করতো।
Leave a reply