প্রতি বছরে বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার নারীকে ভারতে পাচার করা হয়, এবং তাদের অনেককেই বিক্রি করে দেয়া হয় যৌনপল্লীগুলোতে। ভারত ও বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তবে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান না থাকার কথাও জানানো হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আট বছরে শুধু ভারতের দুটি রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র) থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ১৭৫০ জনকে, যাদের বেশিরভাগই নারী।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই সংখ্যা খুবই নগন্য। পাচারের পর উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই এখন ভারতের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে দিনযাপন করছেন। আইন, বিচারিক ও কূটনৈতিক বিভিন্ন প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে উদ্ধারের পরও বছরের পর বছর আশ্রয়কেন্দ্রে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় ভিকটিমদের।
ভারতে মানবপাচারের প্রতি ৪ মামলার একটির রায় হয়। আর বাংলাদেশে ২০১২ সালে প্রণীত একটি আইনে দায়ের হওয়া মাত্র ৩০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। একই ধরনের ৪ হাজারের বেশি মামলা ঝুলে আছে।
রয়টার্সের রিপোর্টে প্রিয়া নামের এক ভিকটিমের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ১৫ বছর বয়সে এই মেয়েটি তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ভারতে পাচার হন। বাড়ি থেকে তাকে আনার সময় মেয়েটিকে বলা হয়েছিল গায়িকা হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়া হবে তাকে। এরপর প্রিয়াকে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দেয়া হয় যৌনপল্লীতে।
ছয় বছর ধরে সেখানে তারা জীবন কাটে জাহান্নামের মতো। এক সময় উদ্ধার হন মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তায়। কিন্তু গত তিন বছর ধরে আশ্রয় কেন্দ্রে পড়ে আছেন, দেশে ফিরতে পারছেন না।
জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠা প্রিয়া (যৌনপল্লীতে তার ছদ্মনাম) রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আর কত অপেক্ষা করবো। এখন যদি তারা আমাকে (দেশে) যেতে বলে তাহলে হয়তো যাবো না।’
Leave a reply