মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই ভাইরাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্যাতনের পর তাকে টানাহেঁচড়া করার সিসি টিভি ফুটেজ। এই ফুটেজেই হলগেটে আবরারের লাশের পাশে অনেকটাই নির্লিপ্ত দেখা যায় দুই শিক্ষককে। এ নিয়ে সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ক্ষোভের মুখেই বুধবার পদত্যাগ করেছেন শের-ই বাংলা হলের প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান।
ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর শের-ই বাংলা হলের প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমানের সঙ্গে হলগেটে আলাপচারিতায় মগ্ন আবরার হত্যায় অভিযুক্তরা। এ সময় তাদের সবাইকে নির্লিপ্ত মনে হয়েছে। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পরও হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে হল গেটে রাত পার করেন প্রভোস্ট ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক।
এ সময় আবরারকে হাসপাতালে নেয়ার কোনো উদ্যোগ তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। এরই মধ্যে, বুয়েটের চিকিৎসক আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আবরার মারা গেছে টের পেয়ে অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করেন আরও কয়েকজন সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথেও। তাদের পরামর্শে তারা হলেই অবস্থান করেন। নির্লিপ্ততার সাথেই শিক্ষকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে দরকষাকষি করেন। শিক্ষকরাও তখন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে বুয়েট শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
আবরারের ঘাতকরা শিক্ষদের বোঝান আবরার শিবিরের কর্মী, তাই তাকে শাসন করা হয়েছে। শিক্ষকরা এসময় নির্বিকার ছিলেন। কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষকরা আসলে তাদের করণীয় খুঁজে পাননি। তবে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, হল প্রভোস্টসহ অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে, ভোরের দিকেই হল সরগরম হয়ে উঠলে শুরু হয় হত্যার মামলার আসামিদের ছোটাছুটি। সবচেয়ে বেশি মারধর করা মাতাল অনিক দৌড়ে চলে যান রুমের দিকে। এমনকি আরও কয়েকজন তাদের রুমেই দরজা বন্ধ করে বসে ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বুয়েট ছাত্রলীগের কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হন আবরার ফাহাদ। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে পেটানো হলেও আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে যমুনা নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন:
Leave a reply