চলতি বছরের অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তিন মার্কিনী পেয়েছেন এটি। এর মধ্যে একজন হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত অভিজিত ব্যানার্জি। সাথে অন্য যে দুজন অর্থনীতিবিদ তাদের একজন এস্তার দুফলো অভিজিতেরই স্ত্রী। ৪৬ বছর বয়সী এই নারী ইতিহাসে মাত্র ২য় নারী যিনি অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন। তিনি আবার এই ক্যাটাগরিতে সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ীও। অন্য যেই অর্থনীতিবিদ পুরস্কারে ভাগ বসিয়েছেন তিনিও অভিজিত-দুফলোর বন্ধু। দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করেছেন তারা।
অভিজিত-দুফলোকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে আরেকটি নাম উঠে আসে, আর তা হলো- ‘আব্দুল লতফি জামিল’। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ‘আব্দুল লতিফ জামিল প্রফেসর’ হলেন এই দম্পতি। তারা উভয়ে যৌথভাবে এমআইটিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আব্দুল লতিফ জামিল প্রোভার্টি এলিভিয়েশন ল্যাব’। এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে দারিদ্র বিমোচনে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি ও গবেষণায় তহবিল প্রদান করে থাকে।
আব্দুল লতিফ জামিল হলে একজন সৌদি ধনকুবের। ১৯০৯ সালে জন্ম নেয়া এই দানবীর ব্যক্তি মারা যান ১৯৯৩ সালে। এর আগে তার সম্পদের একাংশ দিয়ে চালিয়েছে এসেছেন দারিদ্র বিমোচনের কাজ। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও তুরস্কে কাজ করেছেন তিনি।
শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, দারিদ্র বিমোচনে কী ধরনের কাজ করলে দীর্ঘ মেয়াদে বেশি ফলাফল আনা সম্ভব হবে তার উপর গবেষণা করতে তার রেখে উইল করে রেখে যাওয়া সম্পদ থেকেই প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘আব্দুল লতিফ জামিল প্রোভার্টি এলিভিয়েশন ল্যাব’। এই প্রতিষ্ঠানের মাধম্যে বিশ্বব্যাপী দরিদ্র মানুষের সহায়তা করা হয়।
বিশ্বের নামকরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য তহবিল সরবরাহ করে থাকে ‘আব্দুল লতিফ জামিল প্রোভার্টি এলিভিয়েশন ল্যাব’। অভিজিত-দুফলোর গবেষণা মূলত এই প্রতিষ্ঠানেরই দীর্ঘদিনের তহবিলে পরিচালিত গবেষণার ফল। ২০০৩ সাল থেকে এমআইটিতে দারিদ্র বিমোচন নিয়ে কাজ করছিলেন অভিজিত।
আব্দুল লতিফ জামিল মূলত সৌদি আরব প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দিকের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। সৌদিতে তিনিই প্রথম টয়োটা গাড়ি কোম্পানির ডিলারশিপ পান। এই ব্যবসাতেই তিনি বিরাট সম্পদের মালিক হন।
এমআইটির ওয়েবসাইটে আব্দুল লতিফ জামিল প্রোভার্টি এলিভিয়েশন ল্যাব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘জেপিএএল পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখে সামাজিক সমস্যা নিরসনে কী ধরনের স্থানীয় উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হবে এবং সেসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিভিন্ন দেশের সরকার ও এনজিওদের সাথে মিলে কাজ করে। বিশ্বব্যাপী কৃমিনাশক কর্মসূচিতে পদক্ষেপ নেয়া এই প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর একটি।’
আব্দুল লতিফ জামিল কোম্পানির অধীনে তার বড় বড় ব্যবসা এখন দেখভাল করেন তার সন্তানেরা।
Leave a reply