যে দেশে পর্বতমালার ঢালঘেঁষে মেঘের কোল ছোঁয়। ছবির চেয়ে সুন্দর খুবই ছোট্ট একটি দেশ। দেশটির বয়স প্রায় এক হাজার বছর হলেও যুদ্ধ-বিগ্রহে জড়ানোর কোনো রক্তাক্ত ইতিহাস নেই। তাই দেশটিকে অপরাধমুক্ত বলা চলে। এ দেশে কোনো কারাগার নেই। একান্ত প্রয়োজন হলে, ফ্রান্স কিংবা স্পেনের জেলখানা ব্যবহার করা হয়।
ইউরোপের দক্ষিণ-পশ্চিমে ফ্রান্স এবং স্পেনের সীমান্তে পিরিনিজ পর্বতমালার ঢালঘেঁষে গড়ে ওঠা দেশটির নাম আন্দরা। পুরো নাম প্রিন্সিপালিটি অব আন্দরা। আন্দোরার অর্থনীতি প্রায় পুরোটাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর এখানে ঘুরতে আসেন এক কোটি পর্যটক।
অনেকে মনে করেন যে, ‘আন্দরা’ আরবি ‘আল-দুরা’ থেকে উদ্ভূত হতে পারে, যার অর্থ ‘মুক্তা’। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০২৩ মিটার (৩৩৫৬ ফুট) উঁচুতে ইউরোপের সর্বোচ্চ শহর আন্দরা-লা-ভেইয়া হচ্ছে আন্দরার রাজধানী।
এ বছর মে মাসের ১৬ তারিখ থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন ৪০ বছর বয়স্ক জ্যাভিয়ে এসপো জামোরো।
২০০৪ সালে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান করে নেয় আন্দোরার স্বর্গসদৃশ ল্যান্ডস্কেপ।
দেশটি আয়তনে মাত্র ৪৬৮ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশ আন্দরার চেয়ে ৩০৮ গুণ বড়। এ দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ রাস্তাটি মাত্র ৪০ কিলোমিটার। আর জনসংখ্যা ৭৩ হাজারের একটু কম। প্রতি বছর এক কোটি পর্যটক এ দেশে ঘুরতে আসেন।
২৯৪২ মিটার (৯৬৫২ ফুট) উচ্চ কোমা পেদ্রোসা আন্দরার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে দেশের উপত্যকাগুলোতে বছরের বেশ কয়েক মাস ধরে পুরোপুরি তুষারপাত হয়। পর্বতমালা আর উপত্যকা বেয়ে নেমে এসেছে ছোট ছোট বহু ঝরনাধারা।
বর্তমানে আন্দরা হচ্ছে- পৃথিবীতে একমাত্র সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ, যে দেশে একই সঙ্গে দুজন রাষ্ট্রপ্রধান। একজন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আর অন্যজন হচ্ছেন স্পেনের উর্গেল অঞ্চলের বিশপ।
১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত এ দেশে সামন্ততান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বলবৎ ছিল। ১৪ মার্চ ১৯৯৩ সালে আন্দরার সংবিধান রচনা ও স্বাক্ষরিত হয়।
সেই থেকে দেশটি আইনের শাসনের অধীনে একটি গণতান্ত্রিক সামাজিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং সে বছরই জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
Leave a reply