মুহাম্মদ আরিফুর রহমান, ফেনী
নুর উদ্দিন :
১ ও ৩ এপ্রিল তারখি কারাগারে আটক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অধ্যক্ষের পরামর্শে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হয়। নুর উদ্দিন গেইট পাহারায় দায়িত্বে ছিলেন। তার প্রেম প্রত্যাখান করেন নুসরাত।
শাহাদাত হোসেন শামীম :
তখন আমি নুসরাতের মুখ চেপে ধরি। দিশলাই কাঠি দিয়ে আগুন ধরার জন্য জোবায়েরকে ইশারা করি। কেরোসিন কেনেন। মামলা তুলতে অস্বীকার করলে পেছন থেকে ধরে পেলেন। আন্দোলন ও বোরকা কেনার জন্য সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদ আলম তাঁদের ১০ হাজার টাকা এবং এক শিক্ষক পাঁচ হাজার টাকা দেন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা তিনি নুর উদ্দিনকে দেন। আর তিনটি বোরকা কেনার জন্য তাঁর চাচাতো বোনের পালিত মেয়ে ও ওই মাদ্রাসার ছাত্রীকে দেন দুই হাজার টাকা।
আবদুর রহীম শরিফ :
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে ও পরামর্শে নুসরাতকে হত্যার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানো হয়। এ জন্য ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করা হয়। ৪ এপ্রিল সকালে ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তাঁর (রহিম) দায়িত্ব পড়ে মাদ্রাসার গেটে।
হাফেজ আবদুল কাদের :
সক্রিয় পরিকল্পনাকারী ও তিনি হত্যাকা-ের সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। কারাগার থেকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার পরামর্শ ও নির্দেশেই নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গত ২৮ ও ৩০ মার্চ তিনি অন্যদের সঙ্গে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে ফেনী কারাগারে দেখা করেন। অধ্যক্ষের পরামর্শমতোই ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয় মাদ্রাসায় তাঁর শয়নকক্ষে।
উম্মে সুলতানা পপি :
এরপর মণি ও পপি ধরে ফেলে নুসরাতকে। পপি পা ধরে রাখে। নুসরাত হত্যার ঘটনায় পপি প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী ছিলেন। নুসরাতকে ৬ এপ্রিল নিচতলা থেকে ডেকে সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যান। এরপর নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার ঘটনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
জাবেদ হোসেন :
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সাথে সরাসরি জড়িত। পলিথিন থেকে নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেন। ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করা হয়। ৪ এপ্রিল সকালে ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়।
কামরুন নাহার মনি :
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সাথে সরাসরি জড়িত। নুসরাতের বুকসহ শরীর চেপে ধরেন। এবং তিনি বোরকা ব্যবস্থা করে দেন। উম্মে সুলতানা নুসরাতের পায়ে বেধে চলে যাওয়ার সময় মনি তাকে শম্পা বলে ডাকে। এই শম্পা দেয়া নামটি পপি ও মনির দেয়া নাম। এই কিলিং মিশনে আর কোনো ছদ্ম নাম ব্যবহার হয়নি।
আবদুর রহীম শরীফ ঃ
মাদ্রাসার গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিল।
এমরান হোসেন মামুন :
ঘটনার দিন সে গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিল। যাতে করে ছাদে কিলিং মিশনে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।
ইফতেখার উদ্দিন রানা :
ঘটনার দিন সে গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিল। যাতে করে ছাদে কিলিং মিশনে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।
মহিউদ্দিন শাকিল :
হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যাকা-ের দিন পাহারার দায়িত্ব ছিলেন শাকিল
সিরাজ উদ দৌলা ঃ
সিরাজের সঙ্গে মামলার আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম ও নুর উদ্দিন ফেনী কারাগারে দুইবার দেখা করেন। তখন সিরাজ তাঁদের নির্দেশ দেন নুসরাতকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে। এ প্রস্তাবে নুসরাত রাজি না হলে তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন এবং পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালাতে বলেন।
৫ জনের কিলিং মিশন। সংক্ষেপে কার কী ভূমিকা ঃ
শাহাদাত হোসেন শামীম : তখন আমি নুসরাতের মুখ চেপে ধরি। দিশলাই কাঠি দিয়ে আগুন ধরার জন্য জোবায়েরকে ইশারা করি। কেরোসিন কেনেন। মামলা তুলতে অস্বীকার করলে পেছন থেকে ধরে পেলেন।
জোবায়ের আহমেদ : জোবায়ের নুসরাতের ওড়না ছিঁড়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। জোবায়ের ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়
জাবেদ হোসেন : পলিব্যাগে থাকা কেরোসিন নুসরাতের পা থেকে বুক পর্যন্ত ঢেলে দেয়।
উম্মে সুলতানা পপি : নুসরাতকে নিয়ে পপি ছাদে উঠে। এরপর মণি ও পপি ধরে ফেলে নুসরাতকে। পপি পা ধরে রাখে।
কামরুন নাহার মনি : মণি তাঁর বুক ধরে রাখে। তিনটি বোরকা ব্যবস্থা করে।
Leave a reply