নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অরুণ কুমার সাহা (৭৪) ও তার স্ত্রী হেনা রাণী সাহা (৬৫) চাঞ্চল্যকর লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের (ডাবল মার্ডার) প্রধান আসামি সিরিয়াল কিলার তাজুল ইসলাম ওরফে তাজুকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশ আটক করেছে।
চাঞ্চল্যকর ওই মামলাটি ময়মনসিংহ (পিবিআই) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’র এক দায়িত্বশীল ইন্সপেক্টর তদন্ত করছেন। শনিবার রাতে তাহিরপুরের বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মাণিগাঁও গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।
তাজুল নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাগিচাপাড়ার আজিজুল ইসলাম। ওই জোড়া খুনের পরপরই তাজুল সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট এলাকার দিঘীরপাড় গ্রামে শ্বশুর বাড়ি সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকে।
পিবিআইর’র তদন্তকারী অফিসারের দাবি ২০১৫ সালে সংঘটিত ওই দম্পতি হত্যাকাণ্ডের এখন পর্যন্ত আটক হওয়া মুল হোতা ও প্রধান আসামী এই সিরিয়াল কিলার তাজুল ইসলাম। শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো.আমির উদ্দিন শনিবার রাতে একদল পুলিশ নিয়ে টহলকালীন সময়ে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার সময় তাজুলকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন।
ময়মনসিংহ পিবিআই’র তদন্তকারী অফিসার কর্তৃক তাহিরপুর থানায় প্রেরিত তাজুলকে গ্রেফতারে অধিযাচন পত্রের আলোকে তাকে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নানা টালবাহানার পর নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানায় জোড়া-খুনের পলাতক আসামি হিসেবে তাজুল নিজেই স্বীকার করে নেয়।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর শুক্রবার দিনদুপুরে দুর্গাপুর পৌর শহরের সুবর্ণা প্লাজার তৃতীয় তলার নিজ বেডরুমে ব্যবসায়ী দম্পতিকে একদল দুর্বৃত্ত পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার পর রক্তাক্ত লাশ ফেলে রেখে যায়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত দম্পতির ছেলে সমীর চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে ২৫ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর বেশ কিছুদিন সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে।
‘ক্লু লেস’ ওই মামলাটি আরও অধিকতর তদন্ত ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তকরণে তদন্তভার ময়মনসিংহ পিবিআইকে তদন্ত ভার দেয়া হয়।
তৎকালীন সময়ে দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর দিনে বয়োবৃদ্ধা দম্পতিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজো গোটা দুর্গাপুরবাসী শোকে বিহ্বল হয়ে আছেন।
শনিবার রাতে ময়মনসিংহ (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (ওসি) মো. আবুল কাশেম বলেন, ক্লু-লেস জোড়া হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার পিবিআই’র উপর ন্যাস্ত হবার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে ব্যবসায়ী অরুণ সাহা ও তার স্ত্রী হেনা রাণী সাহাকে তাজুলের নেতৃত্বে একটি ভাড়াটিয়া খুনিচক্র গলাকেটে দম্পতির লাশ ঘরে ফেলে রেখে চলে যায়।
তাজুল একজন পেশাদার ‘সিরিয়াল কিলার’ দাবি করে পিবিআই’র ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, সে মূলত টাকার বিনিময়ে অতীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটনায়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।
Leave a reply