নাবালিকা মেয়েটির পেটে খুব ব্যথা। সে ভাবে, অনেক বড় রোগ হয়েছে তার। বাবা-মা তা-ই বলেছেন তাকে। চিকিৎসকরা মেয়েটিকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়েছেন। কোনো রোগের জন্য অপারেশন নয়, হবে আসলে সিজারিয়ান! আজ যে মা হতে চলেছে দশ বছরের ছোট্ট মেয়েটি।
হ্যাঁ, বাস্তব ঘটনা এটা। ভারতের চন্ডিগড়ের মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল গতবছর। নরপশুটি ছিল তারই চাচা। গর্ভবতী হয়ে পড়লে জানাজানি হয় ঘটনা। বাবা-মা গর্ভপাত করাতে চান। কিন্তু ডাক্তাররা মিলে মতামত দেন গর্ভপাতের চেষ্টা ‘খুব বিপজ্জনক’ হবে শিশুটির জন্য। থানা-পুলিশ করার পর মামলা গড়ায় আদালতে। এক পর্যায়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, গর্ভপাত করানো যাবে না।
বাধ্য হয়েই অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে পরিবার-স্বজন। বাচ্চা মেয়েটি কিভাবে বহন করবে আরেকটি বাচ্চার ভার? শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকবে তো সে? উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে পরিবারের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে, সহমর্মী মানুষের মধ্যে। তবে গতকাল মোটামুটি বড় কোনো ঝুঁকি ছাড়াই সন্তানের জন্ম দিয়েছে সে।
২.৫ কিলোগ্রাম ওজনের সদ্যজাত শিশু ও তার মা- দুজনেই সুস্থ আছে বলে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন। তবে মেয়েটি এখনও জানে না সে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। সে জানে, পেটে একটা বড় পাথর তৈরি হওয়ায় তার পেট ফুলে উঠেছে।
আর জানতেও দিতে চান না মা-বাবা। তারা ডাক্তার ও স্বজনদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। নবজাতককে দত্তক দেয়ার ব্যবস্থা করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে পরিবার।
ভারতে শিশুদের কল্যাণে কাজ করেন যেসব মানবাধিকার কর্মীরা, তাদের অনেকেই ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলছেন, ওই মেয়েটি খুব মেধাবী, কিন্তু সেতো এখনও একটি নিষ্পাপ শিশু। তার সঙ্গে যে কী ঘটে গেছে, সে তা বুঝেই উঠতে পারেনি।
গত সাত মাস ধরে এক চাচার হাতে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। ধর্ষক এখন কারাগারে।
/কিউএস
Leave a reply