সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার এক বছর

|

ইয়ামিন আলী, বাগেরহাট

সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ঘোষণার প্রথম বার্ষিকী আজ। গত বছরের এই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ৬টি বনদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত’র ঘোষণা দেন। এলিট ফোর্স র‌্যাব সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার প্রথম বার্ষিকী পালনে বাগেরহাট স্টেডিয়ামে আয়োজন করেছে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের।

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার প্রথম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা আত্মসমর্পণকৃত সকল বনদস্যুদের দেয়া হবে আর্থিক অনুদান ও উপহার সামগ্রী। আত্মসমর্পণ করা ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু আত্মসর্মপণের মধ্যস্থতায় ছিলো, যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন উল হাকিম। গত বছর সর্বশেষ এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর পর গোটা সুন্দরবন দস্যু মুক্ত হয়। এসব বনদস্যু বাহিনীগুলো আত্মসমর্পণের পর এখন সুন্দরবনের বাতাসে নেই বারুদের গন্ধ। শোনা যায়না গুলির শব্দ।

এক সময়ে সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো বনদস্যু বাহিনীগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম র‌্যাবের আহ্বানে আত্মসমর্পণে এগিয়ে আসে মাস্টার বাহিনী প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টারসহ ৯ বনদস্যু। ২০১৬ সালের ৩১ মে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের ফুয়েল জেটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ৫১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে মজনু বাহিনী, ইলিয়াস বাহিনী, আলম বাহিনী, শান্ত বাহিনী, মানজার বাহিনী, মজিদ বাহিনী, বড় ভাই বাহিনী, ভাই-ভাই বাহিনী, সুমন বাহিনী, আলীপ বাহিনী, জাহাঙ্গীর বাহিনী,দাদা ভাই বাহিনী, হান্নান বাহিনী, আমির বাহিনী, মুন্না বাহিনী, ছোট শামছু বাহিনী, মানজু বাহিনী, বাহিনীসহ ২৬টি বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর বাগেরহাট স্টেডিয়ামে সত্তার বাহিনী, শরিফ বাহিনী, সিদ্দিক বাহিনী, আল-আমিন বাহিনী, আনারুল বাহিনী ও তৈয়ব বাহিনীর বনদস্যুরা আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণকৃত ৩২টি বাহিনী প্রধানসহ সর্বমোট ৩২৮ বনদস্যু সদস্য আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তারা র‌্যাবের হাতে তুলে দেয় ৪৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৩ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গত বছরের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর ম্যানগ্রোভ এই বনে বইছে শান্তির সুবাতাস। বনদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড এই বনের জীব-বৈচিত্র্য। বন্ধ হয়েছে জেলে-বনজীবীদের মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ ও দেশি-বিদেশি চোরাকারবারিদের চাহিদা মতো হরিণ, বাঘ-কুমির শিকার ও পাচার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply