পুঠিয়ায় শ্রমিক নেতা হত্যা: এজাহার কারসাজির প্রমাণ পেয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি

|

রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার কারসাজি করেছিলেন তৎকালীন ওসি সাকিল উদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তা। এবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে এ সত্য। এর আগে, যমুনা টেলিভিশনের অনুসন্ধানেও ওঠে আসে এই জালিয়াতি। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি যমুনা টিভির প্রতিবেদন প্রাথমিক প্রমাণ উপাত্ত হিসেবে গ্রহণ করেছে। আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। জানা গেছে, এ ধরনের জালিয়াতি থানায় এজাহার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, সময় ও তারিখ উল্লেখের সুপারিশ করেছে কমিটি।

পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের লাশ পাওয়ার ঘটনায় আব্দুর রহমান পটল, আহসান উল হক মাসুদ, মোঃ মিঠু, মোঃ গোলাম ফারুক, কেএম শাহীন, মোঃ নুরুল আমিন, মোঃ মতিন ও মোঃ আব্দুর রশীদ- এই ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার দায়ের করেন নিহতের মেয়ে। বলা হয়, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ থেকে হত্যা করা হয় নূরুল ইসলামকে।

কিন্তু পরে দেখতে পাওয়া যায়, অদৃশ্যভাবে পাল্টে যায় এজাহার। সুনির্দিষ্ট নামের বদলে, লেখা হয়েছে অজ্ঞাতনামা। ৬ জন সন্দেহের তালিকায় থাকলেও পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে স্থানীয় দুই রাজনীতিক ফারুক এবং মাসুদকে।

পরে বিষয়টি উচ্চ আদালতে আনা হলে, নির্দেশ দেয়া হয়, বিচার বিভাগীয় তদন্তের। যেটির ওপর হাইকোর্ট আদেশ দেবেন কাল মঙ্গলবার।

জানা গেছে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-

১) কারসাজি করা হয়েছে, নিহত শ্রমিক নেতার মেয়ে, নিগারের দায়ের করা এজাহার।
২) কারসাজিতে জড়িত, পুঠিয়া থানার তখনকার ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদ বাপ্পীসহ বেশ কয়েকজন।
৩) জড়িতদের মধ্যে আছেন, ৩ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
৪) আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে, জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

বিচার বিভাগীয় কমিটির সুপারিশে, নিগার সুলতানার প্রকৃত এজাহারটিকে এজাহার হিসেবে নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি থানায় এফআইআর ও এজাহার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সময় ও তারিখ উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

এরআগে নূরুল ইসলাম হত্যা ও মামলাটির তদন্তের বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছিল যমুনা টেলিভিশন। ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি ও যমুনা নিউজে তুলে ধরা হয়েছিল, এজাহার বদলের ঘটনা। পাশাপাশি প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে নিরপরাধ কিশোরের ১৬৪ ধারায় সাজানো স্বীকারোক্তি নিয়ে পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তির অসংগতিও তুলে ধরা হয়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি যমুনা টিভির প্রতিবেদন প্রাথমিক উপাত্ত হিসেবে গ্রহণ করে।

ওই কিশোরকে নির্যাতনের পর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে, নামাজ পড়িয়ে জোরপূর্বক আদায় করা হয় মিথ্যা জবানবন্দি। জজ মিয়া নাটকের অবসান ঘটিয়ে প্রকৃত আসামিদের সাজা আশা করছে ভুক্তভুগী দু’টি পরিবার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply