আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

|

একে একে ভারতীয় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান ফিরলেও পথের কাঁটা হয়ে আছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। বাংলাদেশ বোলারদের নিয়ে রীতিমতো খেলছেন তিনি। এবাদত, মিরাজ, তাইজুলদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে হেসেখেলে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এ নিয়ে মাত্র ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় দ্বিশতক করলেন এ ওপেনার।

এর আগে গেল অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন আগারওয়াল। এটিই তার ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তবে সেটি ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে আছেন তিনি। এখন ২১০ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ব্যাটিং মায়েস্ত্রো।

আগারওয়ালের মহাকাব্যিক ব্যাটিংয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে ভারত। ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান সংগ্রহ করেছে তারা। এরই মধ্যে ২২৪ রানের লিড নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। স্বভাবতই ব্যাকফুটে বাংলাদেশে।

প্রথম দিনের ১ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন খেলতে নামে ভারত। ৩৭ রানে আগারওয়াল এবং ৪৩ রান নিয়ে পুজারা দিনের খেলা শুরু করেন। আগের দিন দলীয় ১৪ রানে হিটম্যান রোহিত শর্মা ফেরার পর দারুণভাবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেন তারা। দিন শেষে জমাট বেঁধে ওঠে তাদের জোট।

তবে এদিন শুরুতেই তাদের জুটিতে ভাঙন ধরে। পুজারাকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ। তাতে ভাঙে ৯১ রানের পার্টনারশিপ। বৃহস্পতিবার রূদ্রমূর্তি ধারণ করার আগে ইনফর্ম রোহিতকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। ফেরার আগে অবশ্য ২৩তম ফিফটি তুলে নেন পুজারা। ৭২ বলে ৯ চারে ৫৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি।

সেই রেশ না কাটতেই সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আবু জায়েদ। অবশ্য প্রথমে তার আবেদনে সাড়া দেননি অনফিল্ড আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিলে সিদ্ধান্তের হেরফের ঘটে। এতে ডাক মেরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ভারতীয় অধিনায়ক।

সকালে আবু জায়েদের জাদুকরী স্পেলে পুজারা ও কোহলি দ্রুত ফেরায় আশা জাগে বাংলাদেশের বুকে। ভারতকে তাড়াতাড়ি অলআউট করার স্বপ্ন দেখে তারা। তবে টাইগারদের হতাশ করেন আগারওয়াল ও রাহানে। পরস্পরের মাঝে দারুণ বোঝাপড়া গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে অসাধারণ মেলবন্ধন তৈরি হয় দুজনের মধ্যে। তাতে ছুটতে থাকে ভারত। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে সফরকারী বোলারদের কচুকাটা করেন তারা।

ভারতীয় ক্রিকেট আকাশে ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব আগারওয়ালের। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ফর্মের তুঙ্গে আছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় পথিমধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি হাঁকান এ ওপেনার। এবাদত হোসেনের বল স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে ২ রান নিয়ে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন ডানহাতি ব্যাটার। ঝুলিতে রয়েছে ৬টি হাফসেঞ্চুরি।

এক আবু জায়েদ ছাড়া কোনো টাইগার বোলারই ভারতীয় শিবিরে আতঙ্ক ছড়াতে পারেননি। সবাই নখদন্তহীন বোলিং করেন। বাংলাদেশ বোলারদের নির্বিষ বোলিংয়ের ফায়দা লুটে আগারওয়ালের পর সেঞ্চুরির পথে ছুটেন রাহানে। তবে পারেননি তিনি। তাকে সেঞ্চুরিবঞ্চিত করেন সেই জায়েদ। ব্যক্তিগত ৮৬ (৯x৪) রানে ভারতীয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন তিনি। এতে আগারওয়ালের সঙ্গে ভাঙে রাহানের ভয়ংকর ১৯০ রানের জুটি।

পরের গল্পটা শুধুই আগারওয়ালের। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ধীরে ধীরে দেড়শ রানের পথে এগিয়ে যান তিনি। তাইজুলকে বাউন্ডারি মেরে এর কোটা স্পর্শ করেন ডানহাতি ওপেনার। এরপর আরো ভয়ানক হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে সময়ে ব্যবধানে ডাবল সেঞ্চুরিও ছুঁয়ে ফেলেন। মিরাজকে ছক্কা মেরে কাঙ্ক্ষিত দ্বিশতক করেন আগারওয়াল।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি। ২টি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেন ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply