কুকুরটিকে ঘরে পুষতেন র্যাচেল হোয়াট। বেশ আদরের ছিল তার কাছে। নাম দিয়েছিলেন ‘কোডা’। হঠাৎ এক রাতে ঘরে কোডাকে খুজে পাচ্ছিলেন না র্যাচেল। ভাবলেন বাইরে গেছে হয়তো, চলে আসবে।
কিন্তু রাত শেষে ভোরেও দেখা পেলেন না কোডার। এভাবে দিনের পর সপ্তাহ মাস গেল। বেশ কিছুদিন আর কোনো খবর নেই পোষা কুকুরটির। বেশ দুঃখ পেয়েছিলেন কানাডার ম্যানিটোবার এই বাসিন্দা নারী। তবে তার বিশ্বাস ছিল কোডা যে পরিমাণ বুদ্ধিদীপ্ত তাতে সে নিজের ঘর ঠিকই বের করে নিতে পারবে খুঁজে। আর বাইরে যেখানেই থাকুক সে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে ভালই থাকবে।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে একদিন ঘরে এসে হাজির হলো কোডা। প্রিয় পোষা প্রাণিটিকে কাছে পেয়ে খুশি মালিক। কিন্তু তার জানার উপায় ছিল কেন বাসা থেকে চলে গিয়েছিল সে। আর কোথায় কিভাবে কাটিয়েছে এই দিনগুলি।
মনে প্রশ্ন থাকলেও জানার যেহেতু সুযোগ নেই, তাই কোডাকে পেয়েই সন্তুষ্ট থাকলে র্যাচেল।
এর কিছুদিন পর প্রতিবেশি এক ব্যক্তির নিজের ক্যামেরায় তোলা ছবি দেখছিলেন র্যাচেল। ওই ব্যক্তি সিকিউরিটি ক্যামেরা নিয়ে আশপাশের এলাকায় দিনে রাতে শখের ঘুরেন আর ছবি তুলেন। তার ক্যামেরায় একটি ছবিতে চোখ আটকে যায় র্যাচেলের। এ তো তার কোডাকে দেখতে পাচ্ছেন!
ছবিতেই দেখা যাচ্ছে সেটি তোলার দিন তারিখ। মিলিয়ে দেখলেন ওই সময়টিতেই কোডা নিখোঁজ ছিল। এরপর আরও ছবি দেখলেন। আরও বেশ কয়েকটি ছবিতে কুকুরটির অস্তিত্ব পেলেন। কোন ছবি রাতের বেলা তোলা, কোনোটি দিনের বেলা। সবগুলো ছবিতেই কোডাকে দেখা যাচ্ছে একটি বন্য হরিণের সাথে! বরফ পড়া শীতল পরিবেশে বনের পাশে একটি ঘাসযুক্ত উঁচু জায়গা তারা কখনো পাশাপাশি বসে আছে, কখনো শুয়ে আছে। কখনো একজন ঘুমাচ্ছে আর অন্যজন পাশে হাঁটাহাটি করছে। এমনকি এমন একটি ছবিও পাওয়া গেল যেখানে দেখা যাচ্ছে, রাতের অন্ধকারে কোডা আর তার হরিণ বন্ধুটি একে অন্যকে চুমু খাচ্ছে!
বিস্মিত র্যাচেল ছবিগুলো চেয়ে নেন প্রতিবেশির কাছ থেকে। এরপর ফেসবুকে নিজের একাউন্টে পোস্ট করেন গত মার্চ মাসে। ওই সময় এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবরও প্রকাশ পায়।
সম্প্রতি তার পোস্টটি ভাইরাল হয়। হাজার হাজার মানুষ সেটি শেয়ার করছেন। র্যাচেলের পোষা নারী কুকুর কোডা আর বন্য একটি পুরুষ হরিণের মধ্যকার বিরল ধরনের এমন বন্ধু নিয়ে গতকাল প্রতিবেদন করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট।
প্রাণিজগতে ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার বিষয়টি অসম্ভব না হলেও বিরল।
Leave a reply