কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় চাঞ্চল্যকর স্কুলশিক্ষক মুজিবর রহমান ও তার ভাইকে হত্যার দায়ে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এ রায় দেন। এ সময় তিন আসামি ছাড়া সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আসামি কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামাণিকের দুই ছেলে কামরুল প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখ (পলাতক)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলীর দুই ছেলে নজরুল শেখ ও আবদুল রহিম ওরফে লালিম শেখ, আকুল মণ্ডলের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, বেনজির প্রামাণিকের ছেলে হৃদয় আলী (পলাতক), নাজির প্রামাণিকের ছেলে সম্রাট আলী প্রামাণিক (পলাতক) গোলাপনগর এলাকার মৃত নুরুল হক মালিথার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম ওরফে সিহাব মালিথা ও আশরাফ মালিথা। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের জেল দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী জাকারুল ইসলামের ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভাতিজিকে উত্ত্যক্ত করতো প্রতিবেশী মৃত আয়ুব আলীর ছেলে আরিফ। এ ঘটনায় পুনরায় মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করলে আরিফ ক্ষিপ্ত হয়। ঘটনার দিন ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বাদীর বাবা মজিবর রহমান মাস্টার, চাচা মিজানুর রহমান ও মিনারুল সরদার স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় আসামিরা তাদের পথ আটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই মজিবর রহমান মাস্টারের মৃত্যু হয়।
এ সময় স্থানীয়রা নিহতের আরেক ভাই মিজানুর রহমানকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর মুজিবর রহমানের ছেলে জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন ভেড়ামারায় থানায়। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে আসামিদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে রোববার রায় প্রদান করা হয়।
কুষ্টিয়া আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, ভেড়ামারার চাঞ্চল্যকর দুই ভাই হত্যা মামলায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার বাদী জাহারুল ইসলাম বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।
Leave a reply