রাজধানীর বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
রুম্পার মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা, পুলিশ এখনো এর কোনো কিনারা করতে পারেনি। তার পরিবারের দাবি, তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না।
রুম্পার মৃত্যুর পর থেকে মা নাহিদা আক্তার পারুলের কান্না থামছেই না। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। পানি পর্যন্তও খাচ্ছেন না তিনি।
ঘুমের ওষুধ দিয়েও তাকে ঘুম পাড়াতে পারছেন না স্বজনরা। নাহিদা কাঁদতে কাঁদতে অস্পষ্ট স্বরে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না।
শুক্রবার রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম।
মেয়ের কবরের সামনেই বসে অঝোরে কাঁদছেন পুলিশ কর্মকর্তা বাবা মো. রুককুন উদ্দিন। মেয়ের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নাহিদা আক্তার। স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না। দুদিন ধরে কিছুই খাননি। শারীরিকভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।
নাহিদা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। আমি আমার মেয়েকে ভালো করেই চিনতাম। সে আত্মহত্যাকে ঘৃণা করত। সব সময় হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করত।
বাবা রুককুন উদ্দিন বলেন, যদি সে (রুম্পা) আত্মহত্যা করত, তাহলে নিজের বাসায় থেকেই করতে পারত। বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে করতে হতো না। শুনেছি যে বাড়ির ছাদের নিচে শারমিনের লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়িতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র থাকেন। তারা এখন নাকি পলাতক।
রুম্পার বাবা মো. রুককুন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হিসাবে কর্মরত। মা নাহিদা আক্তার পারুল গৃহিণী। এক ভাই ও এক বোনের রুম্পা সবার বড়।
রুম্পা ২০১৪ সালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি, ২০১৬ সালে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ এইচএসসি উত্তীর্ণ হন।
রুম্পা স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর ছোট ভাই আশরাফুল আলম রাজধানীর ঢাকার ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত।
রাজধানী ঢাকার শান্তিবাগে একটি ফ্ল্যাটে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন রুম্পা ও তার ছোট ভাই। পড়াশোনার পাশাপাশি রুম্পা টিউশনি করাতেন।
গত বুধবার টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার পর রুম্পা। এরপর বাইরে কাজ আছে বলে আবার বাসা থেকে বের হন। কিন্তু এরপর রাতে আর বাসায় ফিরেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি।
বৃহস্পতিবার রুম্পার মা-সহ স্বজনরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেন।
Leave a reply