মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে।
পশ্চিম আফ্রিকার ছোট এই দেশটির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মঙ্গলবার গাম্বিয়ার রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি শুরু হচ্ছে। চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
বুধবার হবে মিয়ানমারের শুনানি, যাতে অংশ নেবেন নোবেলজয়ী অং সান সু চি। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং বিকালে মিয়ানমার প্রতিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন ও চূড়ান্ত বক্তব্য পেশ করবে।
গাম্বিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেবেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। রুয়ান্ডা গণহত্যার জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ তামবাদু।
তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ যুক্তরাজ্যের প্রফেসর ফিলিপ স্যান্ডসসহ বিশ্ব পরিসরে নেতৃস্থানীয় কয়েকজন আইনজ্ঞের শুনানিতে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং কানাডার প্রতিনিধিরা শুনানির সময় পিস প্যালেসে থাকবেন। বাংলাদেশ-কানাডার পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস নেপথ্যে থেকে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করবে।
কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের পক্ষ থেকে সোমবার দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণহত্যায় দায়ীদের বিচার নিশ্চিতে গাম্বিয়ার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই এবং এর প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর কয়েক দশক ধরে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
সর্বশেষ গণহত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও, লুটপাট, বাস্তুচ্যুতের ঘটনা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে। নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে হবে।
আইজিসেতে বিচারের মাধ্যমে গণহত্যায় দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস সচেষ্ট। অন্য সব দেশকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
মামলার শুনানি শুরুর আগেই মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে।
দেশটির রোহিঙ্গা মুসলিমদের সমর্থনকারী মানবাধিকার কর্মীরা বিশ্বব্যাপী এ প্রচার চালাচ্ছেন। ১০টি দেশের শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠন ও ৩০ মানবাধিকার কর্মী একযোগে এ প্রচার শুরু করেছে।
এদিকে আইসিজের শুনানিতে সরাসরি কোনো পক্ষ না হলেও গাম্বিয়াকে লজিস্টিক সহায়তা দেবে বাংলাদেশ।
এ লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মাসুদ বিন মোমেন এক প্রতিনিধি দল নিয়ে দ্য হেগে পৌঁছেছেন। ২০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া তিন রোহিঙ্গাও রয়েছেন।
দলে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে। তারা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন।
Leave a reply