জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় দেন। একই সাথে খালেদা জিয়ার সম্মতি ও পরামর্শ নিয়ে মেডিকেল বোর্ডকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এরআগে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের পুরনো মেডিকেল রিপোর্টই উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা নুতন রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করেন। রিপোর্ট কোথায় পেলেন প্রধান বিচারপতির এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, খালেদা জিয়ার স্বজনদের কাছ থেকে রিপোর্টটি সংগ্রহ করেছেন তারা।
সকালে আদালতে ঢোকা নিয়ে আপিল বিভাগের গেটে হট্টগোল করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। দাবি করেন, ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না সবাইকে। পরে প্রধান বিচারপতি, আদালতে উভয়পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত থাকতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দেন। পরে শুনানি শুরুর পর ৬০ জনেরও বেশি আইনজীবী আদালতে উপস্থিত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। আদালতের প্রতিটি ফটকে নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। মূল ফটকগুলো দিয়ে ঢোকার সময় আগত ব্যক্তিদের পরিচয়পত্রও দেখাতে হয়।
আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে গত বছর ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। ১৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড বাতিল ও খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা।
৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এ আপিলের সঙ্গে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনও করা হয়। ৩০ এপ্রিল ওই আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেদিন বিচারিক আদালতের রায়ে দেয়া অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের আদেশে স্থিতাবস্থা দেন।
পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এ মামলায় হাইকোর্ট ৩১ জুলাই খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দিলে ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী কায়সার কামাল।
Leave a reply