সুনামির সময় যেমন সমুদ্রের জল পাহাড়ের মত উঁচু হয়ে আছড়ে পড়ে লাগোয়া এলাকায়, জলের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় উপকূলবর্তী এলাকাগুলিকে তারচেয়েও ভয়াবহ বিস্ফোরণে আলোড়িত হল সূর্যের বায়ুমণ্ডলের কয়েকটি এলাকা। যার কোনও পূর্বাভাস ছিল না। সূর্যে যে এমন ঘটনা ঘটে, আচমকা একের পর এক ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয় তা এর আগে বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না। এই প্রথম সে ঘটনা জানা গেল; আর তা প্রথম খেয়াল করলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরাই। নাসার ‘সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি (এসডিও)’-র পাঠানো তথ্যাদি বিশ্লেষণ করেই এই করোনায় সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের খবর মিলেছে।
কী দেখেছেন বিজ্ঞানীরা?
একজন ভারতীয় গবেষক দীপঙ্কর জানান, সূর্যের বায়ুমণ্ডলে চৌম্বক ক্ষেত্রের একটি সুবিশাল মেঘকে আমরা আচমকা ভেঙে পড়তে দেখেছি। আর সেই মেঘটা ভেঙে পড়েছে খুব কাছে থাকা কয়েকটি চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর। তাতে যে সেই চৌম্বক ক্ষেত্রগুলি শুধুই ঝনঝন করে কেঁপে উঠেছে তাই নয়, সেই চৌম্বক ক্ষেত্রগুলিকে পুরোপুরি ধ্বংসও করে দিয়েছে সেই ভেঙে পড়া মেঘ। আশপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রগুলি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে জন্ম নিয়েছে বিপুল পরিমাণ শক্তির। যা তোলপাড় করে দিয়েছে করোনার ওই অঞ্চল।
সূর্যের বায়ুমণ্ডলে কেন ঘটে এমন আচমকা বিস্ফোরণ?
গবেষকরা জানিয়েছেন এর নিশ্চিত কারণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি। এ সম্পর্কে জানতে, বুঝতে গেলে এমন আরও বহু ঘটনা চাক্ষুষ করার প্রয়োজন। সবে একটা ঘটনা দেখা গিয়েছে। আরও দেখতে হবে। কেন আচমকা করোনার উপরের স্তরে চৌম্বক ক্ষেত্রের সুবিশাল মেঘের একটি অংশ ভেঙে পড়ে ওই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটায়, কীভাবেই বা তা আশপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রগুলিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে ওই বিপুল পরিমাণ শক্তির জন্ম হয়, তা এখনও বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সূর্যের পিঠ বা ফোটোস্ফিয়ারের চেয়ে দুম করে কেন প্রায় ১০ লক্ষ গুণ বেড়ে যায় করোনার তাপমাত্রা, তা বুঝতে এই ঘটনা সাহায্য করবে।
সূর্যের অভ্যন্তরে একের পর এক বিস্ফোরণগুলি ঘটেছে খুব দ্রুত। যেন একটা বোমার স্প্লিন্টার ছিটকে গিয়ে কাছেই থাকা আর একটা শক্তিশালী বোমা ফাটিয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে আর একটা ফাটছে। তারপর আরও একটা। এমন ঘটনার উদঘাটন সত্যিই চমকে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের।
Leave a reply