খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে রাজশাহী রয়্যালস। এই জয়ে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন খুলনাকে টপকিয়ে শীর্ষ দুইয়ে উঠে এসেছে রাজশাহী। ৪ ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাজশাহী রয়্যালস। সাত ম্যাচে ৫ জয়ের ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে খুলনা।
সোমবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএল সপ্তম আসরের ১৮তম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৪৫ রান করে খুলনা টাইগার্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন শামসুর রহমান শুভ। এ ছাড়া ৩৫ ও ৩১ রান করে করেন রাইলি রুশো ও রবি ফ্রাঙ্কলিঙ্ক।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন রাজশাহী রয়্যালসের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন। উদ্বোধনী জুটিতে তারা যোগ করেন ৮.৫ ওভারে ৭৫ রান। ১৮ বলে ২২ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন আফিফ। চলতি বিপিএলে প্রথম ফিফটি তুলে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। তিনি ৪৪ বলে পাঁচটি চার ও ২ ছক্কায় ৫৮ রান করেন। ১৯ বলে ১৬ রান করে ফেরেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক।
১১৭ রানে ৩ উইকেট পতনের পর রবি বোপারাকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজিত ৩২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছেদেন রাজশাহীর ক্যারিবীয় অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। বল হাতে ৩৭ রানে ৪ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৯ বলে অপরাজিত ২৮ রান করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন রাসেল। এ ছাড়া ৮ বলে অপরাজিত ১৩ রান করেন বোপারা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপদে পড়ে যায় খুলনা। আন্দ্রে রাসেল ও কামরুল ইসলাম রাব্বির গতির মুখে পড়ে ২৯ রানে প্রথমসারির চার ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়ে খুলনা।
ইনিংসের প্রথম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের করা প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান খুলনার আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। দ্বিতীয় বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন নিয়ে ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসের প্রথম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের করা পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন খুলনার এ ওপেনার।
ইনিংসের প্রথম ৫ বলে ৬ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ ও মিরাজের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরানোর আগেই বিপদে পড়েন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
পঞ্চম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বির করা ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মুশফিক। ঠিক পরের বলে ব্যাটিংয়ে নেমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কামরুল ইসলামের দ্বিতীয় শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত।
পরপর দুই বলে ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। কিন্তু ছয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা শামসুর রহমান শুভ রাজশাহীর পেসার রাব্বিকে হ্যাটট্রিক করতে দেননি। রাব্বির করা পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলটি দেখে-শুনে কোনো রকমে ঠেকিয়ে দেন।
দলীয় ৬০ রানে ফেরেন রাইলি রুশো। আফিফ হোসেনের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৪ বলে ৩৫ রান করেন তিনি। এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ফ্রাঙ্কলিংকের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়িনে কামরুল ইসলাম। এই জুটিতেই একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চলতি বিপিএল প্রথম ফিফটি তুলে নেন শামসুর রহমান শুভ। এরপর মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে ১৮ রানে ৪ উইকেট হারায় খুলনা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৪৫/৯ (শামসু ৫৫, রুশো ৩৫, ফ্রাঙ্কলিংক ৩১; রাসেল ৪/৩৭, কামরুল ২/২৩)।
রাজশাহী রয়্যালস: ১৮ ওভারে ১৪৯/৩ (লিটন ৫৮, রাসেল ২৮*, আফিফ ২২, শোয়েব মালিক ১৬, রবি বোপারা ১৩*)।
ফল: রাজশাহী ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।
Leave a reply