বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের শিগগিরই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয় বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ঢাকায় ইইউ মিশন প্রধান বলছেন, কাজটি সহজ নয় এবং এজন্য দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে বাংলাদেশকে। তবে এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে বলে মনে করে সুইজারল্যান্ড।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে পালিয়ে এসেছে অন্তত সাড়ে ছ’লাখ মানুষ। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিলেও দীর্ঘমেয়াদে এটা বহন করা সম্ভব না, সে কথা জাতিসংঘ অধিবেশনেও স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নানা শর্তসাপেক্ষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। সেই অনুযায়ী চুক্তিও করেছে দু’দেশ। তারই ধারাবাহিকতায় গঠিত হয়েছে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ। তারপরও রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজটি সহজ নয় বলে মনে করছেন পশ্চিমারা।
ঢাকায় ইইউ মিশনের প্রধান রেনচা টিয়ারিঙ্কের মতে, বাংলাদেশ এই সংকটের টেকসই সমাধান চায়। সেজন্য পালিয়ে আসা মানুষগুলোর নিজ ভূমিতে ফেরা ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এটা সম্ভব, যদি রাখাইনে তাদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা যায়। এই কাজটা অত্যন্ত জটিল।
ঢাকায় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেনো হোলেনস্টাইন বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে যে সমঝোতা হয়েছে, আমরা তাতে বাংলাদেশের পাশে আছি। পাশাপাশি সব ধরনের মানবিক সহায়তা করতেও প্রস্তুত। কিন্তু এটা সহজে মিটবে বলে মনে হয় না। সময় লাগবে। রোহিঙ্গা সংকট যেভাবে সামলাচ্ছে বাংলাদেশ, তা প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু সবার দায়িত্ব আছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ খুব জরুরি।
সমাধানের পরামর্শস্বরূপ ইইউ মিশন প্রধান বলেন, দীর্ঘমেয়াদী এই সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর অব্যাহত রাখতে হবে কূটনৈতিক চাপ। সীমান্ত খোলা রেখে বাংলাদেশ যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে, তা অনন্য। কিন্তু এটা তো র্দীঘমেয়াদে সম্ভব না। আমরা ক্যাম্পগুলো দেখে মিয়ানমারকে একটা বার্তা দিয়েছি, সেগুলো হয়তো গণমাধ্যমে আসেনি। পাশাপাশি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার যাতে কোনভাবেই লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ এই কূটনীতিকদের।
যমুনা অনলাইন: এএস/টিএফ
Leave a reply