খরার মধ্যে অতিরিক্ত পানি খেয়ে ফেলার কারণে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ১০ হাজারেরও বেশি উটকে গুলি করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামীকালই (৮ ডিসেম্বরই) গুলি করে মারা হবে তাদের। এক আদিবাসী নেতার কাছ থেকে এ বিষয়ে আদেশ আসার পর উটগুলো মারার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার হেলিকপ্টার থেকে ব্রাশফায়ার করে এই বন্য উটগুলোকে গুলি করে মারার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ কাজটি করবেন উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শুটাররা। ১০ হাজারেরও বেশি এই উটগুলো মারতে ৫ দিন সময় লাগতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের আনানজু পিতজানৎজাতজারা ইয়ানকুনিৎজাতজারা ল্যান্ডস (এওয়াইপি) এলাকার এক আদিবাসী নেতা এই নির্দেশ দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চল খুবই খরাপ্রবণ এলাকা। যে কারণে এই অঞ্চলে পানির খুব সংকট রয়েছে। বন্য এই উটগুলো বেশি পরিমাণে পানি খেয়ে নিচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি আরও দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। এছাড়া পানির খোঁজে এদের বিচরণের কারণে সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
এওয়াইপির নির্বাহী বোর্ডের সদস্য মারিতা বেকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমরা যে অঞ্চলে থাকি সেখানে খুব গরম পড়ে। খুবই অস্বস্তিকর পরিবেশে আছি। এর মধ্যে উটগুলোর উৎপাত আমাদের বিষিয়ে তুলেছে। তারা পানির জন্য ঘরবাড়িতে হানা দিচ্ছে, খেত মাড়িয়ে এসে ফসলের ক্ষতি করছে।
আরও একটি কারণে উট মারার বিরোধিতা করতে পারছেন না সেখানকার পরিবেশবাদীরা। ক্ষতিকর মিথেন গ্যাস সৃষ্টির জন্য যে দায়ী এসব উট। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্যও উট দায়ী। প্রতি বছর তাদের মলমূত্র থেকে যে পরিমাণ মিথেন গ্যাস বের হয় তা এক টন কার্বনডাই অক্সাইডের সমপরিমাণ।
কার্বনডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে কাজ করা কার্বন ফার্মিং স্পেশালিস্টস রিজেনকোর প্রধান নির্বাহী টিম মুরে জানান, এক মিলিয়ন উট প্রতিবছর এক টনের সমপরিমাণ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। অর্থাৎ, ৪ লাখ গাড়ি থেকে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, সেই পরিমাণ কার্বনডাই অক্সাইড সৃষ্টির জন্য দায়ী উট!
দেশটির জাতীয় বন্য উট ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের দাবি, এই উটদের সংখ্যা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে প্রতি নয় বছরে সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এত বিপুল সংখ্যক উট মেরে ফেলার পেছনে যুক্তি নেহায়েত কম না!
Leave a reply