ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে একটা পূর্ণ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর তেহরানের পক্ষ থেকে প্রতিশোধের হুঙ্কার দেয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকরাও বলছেন ইরান অবশ্য যে কোনো ধরনের পাল্টা জবাব দেবে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও হুমকি দিয়ে রেখেছে। নতুন কোনো হামলা ইরানের পক্ষ থেকে হলে জবাবে ইরানের ভেতরে হামলা করবে ওয়াশিংটন। ৫২টি বিশেষ ইরানি স্থাপনা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এমন পরিস্থিতিতে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা কমাতে তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। ইউরোপিয়ান দেশগুলো ট্রাম্পের বিভিন্ন আচরণে কিছুটা অখুশি হলেও সোলাইমানির হত্যাকে সবাই সমর্থন জানিয়েছে।
এতে ইউরোপিয়ান দেশগুলো এই ইস্যুতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না। রাশিয়া, চীন সোলাইমানির হত্যায় ইরানের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে দেশ সৌদি আরব নীরব থাকলেও তারা ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ট মিত্র।
অনেকের ধারণা সোলাইমানি হত্যায় রিয়াদ অখুশি নয় মোটেও। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো যখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে অগ্রহণযোগ্য বা অনাগ্রহী, তখন মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষুদ্ধ দুটি দেশ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রচেষ্টা। দেশ দুটি হলো কাতার এবং ওমান। কাতার এবং ওমান একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র এবং ইরানের সাথেও রয়েছে যথেষ্ট ঘনিষ্টতা। তেহরান এবং ওয়াশিংটনের উপরমহলে দুটি দেশেরই ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে।
এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা মধ্যস্থতার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
শুক্রবার সোলাইমানি হত্যার দুই দিন পরই রোববার ইরান সফর করেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুলরহমান আল থানি। সেখানে প্রেসিডেন্ট রোহানি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সাথে তার বৈঠক হয়। তেহরান থেকে ফিরে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সাথে ফোনালাপ করেন আল থানি।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মিত্র তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও একই দিন ফোনালাপ করেছেন তিনি। এই মধ্যস্থতার মূল লক্ষ্য হলো ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে সম্ভাব্য যুদ্ধ থেকে সরিয়ে আনা।
একইভাবে ওমানও তেহরান এবং ওয়াশিংটনে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বহু বছর ধরে কাজ করে আসছে ওমান।
Leave a reply