ফের নির্বাচিত হলে পরবর্তী মেয়াদকে টেস্ট ম্যাচ হিসেবে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার দৈনিক যুগান্তর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ঢাকাকে অপরিকল্পিত শহর মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য সব শহরে আগে পরিকল্পনা তৈরি করে তার পর বসবাস শুরু হয়। আমরা তেমনটি পাইনি। কিন্তু হাল না ছেড়ে ঢাকাকে বসতযোগ্য নগরীর রূপ দিতে কাজ করে গেছি।
বেলা ১১টায় ‘কেমন ঢাকা চাই’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.), স্থপতি অধ্যাপক জালাল আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগান্তরের ডেপুটি এডিটর এহসানুল হক বাবু।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে একটি পরিকল্পিত নগরী নির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করে আতিকুল বলেন, একটি মানবিক শহরে পরিণত করব ঢাকাকে। গত ৯ মাসে ঢাকা উত্তরের দায়িত্বকে আমি ওয়ার্মআপ হিসেবে নিয়েছি। অনেক কিছু শিখেছি সেখান থেকে। মেয়র হিসেবে আবার নির্বাচিত হলে পরবর্তী মেয়াদকে টেস্ট ম্যাচ হিসেবে নেব।
আগের মেয়াদের ৯ মাসের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নগরবাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে মতবিনিময় করলে সফলতা বেশি আসবে বলে মনে করেন এই মেয়র প্রার্থী।
আতিকুল বলেন, একেকটি ওয়ার্ডের দাবিও একেকটি– চাহিদাও আলাদা।
উদহারণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ভাটারা এলাকার স্থানীয়রা চাচ্ছেন– রাস্তা উঁচু নয়; আগে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি করে দিতে হবে। গুলশান এলাকার বাসিন্দারা চাচ্ছেন– সেখানে একটি ফায়ার বিগ্রেড স্টেশন তৈরি করে দিতে। এদিকে মিরপুরের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতা দূর করতেই বেশি তাগিদ দেন।
এসব সমস্যা দূর করতে তার চেষ্টার কমতি ছিল না জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ মেয়র প্রার্থী। তিনি বলেন, এটি সত্য যে, আমরা অনেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ঠিকমতো চিনি না। তাদের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি না। এটি ঠিক নয়। একজন কাউন্সিলরই জানেন তার এলাকায় কি কি সমস্যা রয়েছে। তাই তাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করে জনগণের সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধা চিহ্নিত করে পরিকল্পনামাফিক কাজ করে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন নিরাপত্তাব্যবস্থাই হচ্ছে ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ বিষয়ে গুলশান এলাকার স্থানীয়রা বেশ ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন।
‘তারা সড়ক ও পাড়ায় সিসিক্যাম লাগিয়ে পুরো গুলশান এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছেন।’ স্থানীয় পুলিশের বরাতে তিনি বলেন, সে কারণে গুলশানে এখন অপরাধের মাত্রা একেবারেই কমে গেছে। এ রকম পুরো ঢাকা শহরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনলে এই শহরে অপরাধের মাত্রা আরও কমে যাবে। গেল বছরের ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ে আতিকুল বলেন, মশার নিয়ন্ত্রণে আমরা আগে থেকে পরিকল্পনা দিয়ে সেভাবে কাজ করতে পারিনি। তবে গতবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগে থেকেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এ বিষয়ে জনসচেতনতা মুখ্য একটি বিষয়।
নিরাপদ নগর তৈরিতে মেয়র থাকাকালীন বিশেষ কাজ করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিরাপদ শহর গড়তে আমি মনে করি, ঢাকার অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা শিল্প; বিশেষ করে— সব গার্মেন্টস ভবনকে কমপ্লায়েন্স কাঠামোতে আনতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করেছি। যারা নিদের্শনা মানেননি, তাদের গার্মেন্টস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
Leave a reply