বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, ব্যাংক-বিমাসহ সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিভিন্ন আইনজীবী প্যানেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বরাবর চিঠি দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এতে অ্যাটর্নি জেনারেল প্রস্তাব করেছেন, এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ও দক্ষতাসম্পন্ন আইনজীবীদের বাছাই করতে হবে।
গত ৭ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেলের সই করা ওই চিঠি আজ রোববার অর্থমন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “বিভিন্ন মন্ত্রনালয়, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, ব্যাংক-বিমাসহ সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্ট, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানি আদালতের জন্য বেসরকারি প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।”
“তাদের অধিকাংশ আইন মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি নিয়ে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিয়ে এই নিয়োগ দিচ্ছে। তাদের কর্মপন্থা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, সরকারি কৌঁসুলি ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের সহযোগিতা করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষার্থে মামলা করার জন্য বলা হচ্ছে।”
অ্যাটর্নি জেনারেল চিঠিতে বলেন, “নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশকে দেখা যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫টি বা তারও বেশি সংখ্যক সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পাচ্ছেন।”
“তারা মূলত অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠানে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন হওয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করতে না পারায় সরকারি মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। সরকারি গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আইন শাখাগুলোতে যোগাযোগ রক্ষা করে তারা দীর্ঘদিন এই পদগুলো দখল করে আসছে।”
“অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠান প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সরকারি মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করছে, কিন্তু সুপ্রিমকোর্ট বার কিংবা বার অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে ভিন্ন রাজনীতি করছে। যাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।”
এর পরিপ্রেক্ষিতে নিজের অভিমত হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সব সরকারি আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সরকারি আইনজীবী প্যানেল নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দক্ষতাসম্পন্ন আইনজীবী প্যানেল নিয়োগের বিষয়ে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা সব মন্ত্রণালয়, সরকারি আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে দেওয়া জরুরি।”
এক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেল তিনটি নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন।
১.
কোনো আইনজীবী ২/৩টির বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না।
২.
প্যানেল আইনজীবী দক্ষতা ও মতাদর্শ নিরূপণে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মর্যাদার একজনকে নিয়োগ কমিটিতে বাধ্যতামূলক রাখতে হবে এবং তার মতামত প্রাধান্য দিতে হবে।
৩.
যারা প্যানেল আইনজীবী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত আছেন ও নতুনভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও ফোন নম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে অবহিত করতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেলের এ মতের আলোকে বেসরকারি প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করে মতামত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।
Leave a reply