ব্রিটিশ রাজপরিবার ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তোলপাড় তুলেছেন প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মার্কেল। এ দিয়ে রাজপরিবারে টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে জানা গেলো, হ্যারি-মেগানের নতুন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। যদিও তিনি চান, হ্যারি-মেগান দম্পতি রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে রাজকীয় দায়িত্ব পালন করুক।
গত বুধবার আকস্মিক এক ঘোষণায় রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে স্বনির্ভর জীবন যাপনের জন্য যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি কানাডায় বসবাসের কথা জানান হ্যারি-মেগান। তাদের ওই সিদ্ধান্ত থেকে ফেরাতে গতকাল সোমবার ইংল্যান্ডের নরফক কাউন্টির স্যান্ড্রিংহ্যাম প্রাসাদে হ্যারির সঙ্গে বৈঠক করেন রানি এলিজাবেথ ও পরিবারের সদস্যরা।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে রানি ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেলের নতুন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানিয়েছেন। তবে, তিনি চাইছেন হ্যারি-মেগান রাজপরিবারের সদস্য হিসেবেই পুরো সময় দায়িত্ব পালন করুন। কয়েক দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার প্রত্যাশা করছেন রানি।
সোমবারের সান্ড্রিংহামের এই বৈঠকে হ্যারির বাবা প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস এবং বড় ভাই ডিউক অব ক্যামব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম উপস্থিত ছিলেন।
এক বিবৃতিতে রানি বলেন, সান্ড্রিংহামের বৈঠকটি অত্যন্ত গঠনমূলক হয়েছে। তাদের আরও স্বাধীন জীবনযাপনের তাদের ইচ্ছার বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি ও এর প্রতি সম্মান জানাচ্ছি। নতুন জীবনে তারা সরকারি তহবিলের ওপর নির্ভর করতে চান না। এরপরও তারা আমার পরিবারের মূল্যবান অংশ হিসেবেই থাকবে।
রানি বলেন, এগুলো আমার পরিবারের জন্য স্পর্শকাতর বিষয়। এ ব্যাপারে আরও কিছু কাজ করা বাকি আছে। তবে আমি আর কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বলেছি।
সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘টাইম’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিন্স উইলিয়ামের সাথে বনিবনা না হওয়ার কারণে রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান। এ নিয়ে আরও গল্প ডালপালা মেলে। কেউ কেউ উইলিয়ামের স্ত্রী কেট মিডেলটনের সাথে হ্যারির স্ত্রী মেগানের দ্বন্দ্বের বিষয়টিও সামনে আনেন।
তবে এই সব তথ্যই ‘ডাহা মিথ্যা’ উল্লেখ করে গতকালই হ্যারি ও উইলিয়ামের পক্ষে বিবৃতি দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের মে অনেকটা রাজকীয় রীতির বাইরে গিয়ে মেগানকে বিয়ে করেন হ্যারি। এর এক বছরের মাথায় ছেলে আর্চির জন্ম। ভিন্ন দেশের ও শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় মাঝেমাঝে মেগান মার্কেলকে নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়েছে। গণমাধ্যমের বাড়াবাড়ি ও সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকা নিয়েও বিরক্ত হ্যারি-মেগান। গত বুধবার রাজকীয় দায়িত্ব কমিয়ে এনে নতুন জীবন শুরুর ঘোষণা দেন তারা। উত্তর আমেরিকায় আরও বেশি সময় কাটানোর এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। এতে রাজপরিবারে তৈরি হয়েছে সংকট। দ্রুতই এই সংকটের ইতিবাচক সমাধান হবে এমন আশা অনেকের। তবে, স্বয়ং রানি যখন এ ইচ্ছা পোষণ করেন, তখন সুন্দর সমাধানের আশা আরও ত্বরান্বিতই হয় বটে।
Leave a reply