ভারতে বিধানসভার ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের জেরে বিজেপি ও কংগ্রেসের সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় লোকসভা সোমবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করতে বাধ্য হন স্পিকার ওম বিড়ালা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বিধানসভায় নির্বাচনের আগে ভোটের প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘ছয় মাস পর প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ডান্ডাপেটা করবে বেকার যুবসমাজ’।
শুক্রবার লোকসভায় মেডিকেল কলেজ নিয়ে একটি প্রশ্ন করে কংগ্রেস সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী। সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধীকে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেন, আমাকে ক্ষমা করবেন। রাহুল গান্ধীর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমি তার নিন্দা করতে চাই। দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি। স্পিকার ওম বিড়লা হর্ষ বর্ধনকে ওই প্রসঙ্গ ছেড়ে রাহুলের প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেন। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাতেও থামেননি।
এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কংগ্রেস সংসদ সদস্যরা। স্পিকারের চেয়ারের সামনে গিয়ে তুমুল হই হট্টগোল-বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। হর্ষ বর্ধনের বিরুদ্ধে চলতে থাকে স্লোগান। তার মধ্যেই তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সংসদ সদস্য মানিকরাম ঠাকুর সরকার দলের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় সারিতে বক্তব্য রাখছিলেন হর্ষ বর্ধন। সামনের সারি টপকে তার কাছে গিয়ে শাসাতে থাকেন। তখন বিজেপি সংসদ সদস্যরা তাকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে আনেন।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেই সময় এক বিজেপি সংসদ সদস্য ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং তাকে (মানিকরাম ঠাকুর) পেছন থেকে ধরে বাধা দেন। আর এক কংগ্রেস সংসদ সদস্য হিবি ইডেনও সেখানে আসেন। পরবর্তীতে দুই দলের সংসদ সদস্যদের অনেকেই তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই হর্ষ বর্ধন তার বিবৃতি পড়তে থাকেন। তিনি বলেন,‘‘ রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘ছয়মাস পরে দেশের যুবকরা নরেন্দ্র মোদিকে লাঠি মেরে দেশ থেকে বের করে দেবে’- এমন মন্তব্যের কড়া নিন্দা হওয়া উচিত’।
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কংগ্রেস সাংসদরা আমার আসনের কাছে চলে আসেন। আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন এবং হাত থেকে নথিপত্র কেড়ে নেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা সরকার দলের এমপিদের বিরুদ্ধেই বিশৃঙ্খলা অভিযোগ তোলেন কংগ্রেস এমপি শশী তারু।
এদিকে রাহুল গান্ধীও সংসদের বাইরে বলেন, সংসদের বাইরে আমি কোন মন্তব্য করেছি, সেটা টেনে এনে অধিবেশনের মধ্যে মন্তব্য করা অসংসদীয়। আসলে বিজেপি আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে। আমার উত্তরও দিতে পারেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
Leave a reply