নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে ফ্রান্স। ইউরোপের মধ্যে দেশটি নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় শীর্ষে রয়েছে। ফলে ইউরোপের নারীদের জন্য বড় আতঙ্কের নাম ফ্রান্স। এখানে নারীরা তাদের স্বামী, সঙ্গী কিংবা সাবেক সঙ্গীর দ্বারাই খুন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। গত বছরে গড়ে প্রতি ৩ দিনে একজন নারী সঙ্গী কিংবা সাবেক সঙ্গীর দ্বারা খুন হয়েছেন। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি। তারা সোমবার এ সংক্রান্ত একটি হত্যার ঘটনা তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ঘটনাটি এমন- এক ফরাসি নারীর বোন এবং তার পিতামাতা ওই বোনের সাবেক সঙ্গীর হাতে খুন হন। সোমবার ওই নারী তার পরিবারকে রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ইসাবেলে থমাস নামের দুই সন্তানের মা এবং তার পিতামাতাকে থমাসের সাবেক সঙ্গী প্যাট্রিক লেমোইন গুলি করে হত্যা করে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০১২ সালে প্যাট্রিকের সঙ্গে পরিচয় থমাসের। হত্যার ঘটনায় অটো টেকনিশিয়ান প্যাট্রিককে আটক করা হলেও ২ মাস পর জেলেই সে আত্মহত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের কয়েক সপ্তাহ আগে পুলিশকে তাকে প্যাট্রিক শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেন থমাস। এরপর তাকে আটক করা হলেও পরে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। এরপরই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
হত্যার শিকার নারী থমাসের বোন ক্যাথে থমাস বলেন, ‘ইসাবেলে একটি অভিযোগ দাখিল করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রসিকিউটর কারাগারেও বিষয়টি অবহিত করেছিলেন, কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।’ এভাবে নারীর বিরুদ্ধে নির্যাতন বা খুনের ঘটনা প্রশাসনের অবেহলার কারণেই বাড়ছে। ক্যাথে থমাস আদালতে বলেন, বিচার ব্যবস্থার অবহেলার কারণেই তার বোন ও পিতামাতা হত্যার শিকার হয়েছেন। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি ঘরোয়া সহিংসতার রেকর্ড ফ্রান্সে। অধিকার কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের অবহেলার কারণে দিন দিন এটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখা গেছে, চলতি বছর খুন হওয়া বেশ কয়েকজন নারী পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ফ্রান্সে মোট ১২৬ জন নারী স্বামী, সঙ্গী কিংবা সাবেক সঙ্গীর দ্বারা খুন হয়েছেন।
Leave a reply